Loading Now

লন্ডনে মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক শুরু

জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে আলোচিত এক বৈঠক অনুষ্ঠিত চলছে। শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের পার্ক লেন এলাকার হোটেল ডোরচেস্টারে যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় এবং বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় এ বৈঠক শুরু হয়।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায় বাসা থেকে রওনা দেন তারেক রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় ওয়ান-টু-ওয়ান বা সরাসরি আলোচনার কাঠামোয়। তবে সেখানে আরও কেউ উপস্থিত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত করা হয়নি।

বৈঠকটি বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির মোড় ঘোরানোর সম্ভাব্য সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে রাজনৈতিক ভারসাম্য নাটকীয়ভাবে পাল্টে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এটি ইউনূস ও তারেকের প্রথম মুখোমুখি আলোচনা।

এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা রক্ষা ও কাঠামোগত সংস্কার—এই চারটি বিষয় ঘিরে মূল আলোচনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

বিশেষভাবে, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে। বিএনপি এ সময়সীমা পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাতে বৈঠকে যায়। তাদের বক্তব্য, এপ্রিল মাসে প্রচণ্ড গরম, ঝড়বৃষ্টি ও রমজান মাস থাকায় নির্বাচন আয়োজন ও প্রচারণা ব্যাহত হবে। বিএনপি এ কারণে ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তুলে ধরতে পারে।

এছাড়া, বৈঠকে বিতর্কিত তিন উপদেষ্টার অপসারণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এ উপদেষ্টাদের অব্যাহতি জরুরি। একই সঙ্গে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ আমলারা এখনও প্রশাসনে দায়িত্বে রয়েছেন—এ বিষয়েও বিএনপির পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।

বৈঠকে ‘সংস্কার’ প্রসঙ্গটিও আসতে পারে বলে দলীয় নেতারা মনে করছেন, যদিও তারেক রহমান নিজ থেকে এ প্রসঙ্গ তুলবেন না। তবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আলোচনায় আনলে, তার জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা তারেক রহমানকে দেওয়া হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকে কী বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে, তা নিশ্চিত না হলেও, জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা মনে করছেন—নির্বাচনী সংস্কার, বিচারহীনতা এবং রাজনৈতিক সহিংসতার দায় নিরূপণ বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

সর্বোপরি, লন্ডনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গন, রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বৈঠকের ফলাফল কিংবা বিবৃতি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিং করতে পারেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।