Loading Now

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের নানা সমস্যা

সৈয়দপুর, নীলফামারী : চিকিৎসক সঙ্কট, জনবল ঘাটতি, অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের স্বল্পতা- এসব নানামুখী সঙ্কটে কোনোমতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল। ভৌগোলিক অবস্থান ও সহজ যোগাযোগব্যবস্থার কারণে সৈয়দপুর ছাড়াও পাশের পার্বতীপুর,চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলার মানুষও এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসক ও ওষুধ সঙ্কটের কারণে প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা না পেয়েই ফিরে যাচ্ছে।

১৯৫৮ সালে ৪ একর ৯ শতক জমির ওপর সৈয়দপুরে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন পর্যন্ত দেশের অন্য কোনো থানায় ৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল গড়ে ওঠেনি। পরে জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালে এটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। সরেজমিনে হাসপাতালে গেলে ভর্তি রোগী ও স্বজনরা জানান, সরকারি হাসপাতাল অথচ চিকিৎসার জন্য দরকারি বেশির ভাগ ওষুধই বাইরে থেকে কিনতে হয়। পাঁচ টাকা দামের একটি সিরিঞ্জও হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয় না। গত কয়েকদিন থেকে হাসপাতালের প্রায় সকল ফ্যান অকেজো হয়ে পড়ে আছে। প্রচন্ড গরমে রোগিরা বিছানায় ছটফট করছে। হাত পাখা কিনে রোগীরা বাতাস নিচ্ছেন। হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা এক কর্মচারী বলেন, ওপর থেকে আমরা যা বরাদ্দ পাই, তা-ই রোগীদের দেওয়া হয়।

মহিলা ওয়ার্ডের এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটে। রোগী ও স্বজনদের মোবাইল ফোন, রোগীর সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র, হাসপাতাল চত্বর থেকে স্বজনদের সাইকেল, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, এখানকার অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন থেকে নষ্ট। ফলে রেফার্ডকৃত মুমুর্ষু রোগীদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হলেও তা সম্ভব হয় না। দরিদ্র রোগীরা বাড়তি টাকা খরচ করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে অন্য হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের জনবল কাঠামোর মোট সংখ্যা ১৭৯টি, যার মধ্যে ৯১টি পদই বর্তমানে শূন্য রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের জন্য চিকিৎসকের ৩৮টি পদ রয়েছে, যার মধ্যে ২৮টিই শূন্য। মাত্র ১০ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ১০০ শয্যার এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা। এ ছাড়া সার্জারি চিকিৎসকের অনুপস্থিতির কারণে হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তবে একজন সার্জারি চিকিৎসক ও একজন গাইনোকলজিস্ট মাঝে মধ্যে হার্নিয়াসহ কিছু অস্ত্রোপচার করে থাকেন।

হাসপাতালে বিদ্যমান সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা পরিচালক ডা.আরশেদ হোসেন বলেন, এখানে আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন এলাকার মানুষ। এমনকি করোনাকালেও আমরা ভালো ভূমিকা রেখেছি। আর ওপর থেকে যেটুকু ওষুধ বরাদ্দ পাই তার সব রোগীদের দেওয়া হয়। চিকিৎসক ও জনবল সঙ্কটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারাও আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি শিগগিরই সঙ্কট কেটে যাবে।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।