বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ছিল গোয়েন্দা ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। তাদের মতে, বিডিআর হত্যাকাণ্ড ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল, যেখানে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের বিভিন্ন মাত্রায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বুধবার (২৫ জুন) ধানমন্ডির বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসে (বিআরআইসিএম) ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডবিষয়ক তৃতীয় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্যন্ত তদন্তে ১১৪টি কর্মদিবস পার হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অযথা সময়ক্ষেপণ এবং সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে হত্যাকাণ্ডসহ অন্যান্য অপরাধ সংঘটিত করতে পেরেছে।’
তিনি জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারির সকাল থেকেই পিলখানায় আটকে পড়া কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বারবার আকুতি জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তদন্ত কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ ঘটনায় তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের নানা মাত্রায় সংশ্লিষ্টতা ছিল। এটা প্রমাণ করে যে রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য অযথা কালক্ষেপণ করায় ঘটনাটি বিস্তার লাভ করে।’
কমিশনের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত শহিদ পরিবারের সদস্যদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ছয়জনের বিস্তারিত জবানবন্দি, ১৫ জন বেঁচে ফেরা কর্মকর্তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। আরও ৫০ জনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এ পর্যন্ত আটজন রাজনৈতিক নেতার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, যাদের কেউ কেউ কারাগারে এবং কেউ বিদেশে পলাতক। আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক ইতোমধ্যে চিঠির মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন।
সাবেক নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য ছাড়াও পুলিশ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ কারাবন্দি এবং ২৯ জন কারামুক্ত ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ১৫৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
কমিশন আরও জানায়, ছয়টি দেশের দূতাবাস এবং দেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিদের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এ ছাড়া, ৩৩ জনকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পরিধি ও জটিলতা বিবেচনায় নিয়ে কমিশন ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত তদন্তের মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।