গাইবান্ধায় মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হচ্ছে নারীরা
গাইবান্ধায় মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হচ্ছে নারীরা গাইবান্ধায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন নারীরা। ভদ্রবেশে-ছদ্মবেশী প্রায় শতাধিক নারী জেলা জুড়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পারিবারিকভাবে অনেকেই স্বামীকে ব্যবসায় সহায়তা করতে গিয়ে মাদক সম্রাজ্ঞী খেতাব পেয়েছেন। জেলার শতাধিক পয়েন্টে গাঁজা , ইয়াবা, হেরোইন ও ফেনসিডিল ব্যবসায় এরা তৎপর। গাইবান্ধা শহরের কাঠপট্টি, পুরাতন ব্রীজ , বাংলা বাজার, কলেজপাড়ায় নিয়মিত চলছে মাদক কেনাবেচা। এছাড়া গাইবান্ধার ছয়টি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের মাদক বিক্রির পয়েন্টে সহজেই হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা মেলে। নিরাপদে মাদক বিক্রি করতে বিভিন্ন বয়সী নারীদের দিয়ে মাদক বিক্রি ও পরিবহনের কাজটি সারছে কয়েকটি চক্র।
গাইবান্ধা জেলা পুলিশের একটি সুত্র বলছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত মাত্র পাঁচ মাসে ১২ জন নারী মাদক কারবারিকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে মাদক পরিবহনকারী এসব নারীর সংখ্যা শতাধিক বলে জানা গেছে। বোরকা পরে স্কুল-কলেজের ছাত্রী বেশে ব্যাগে করে এরা মাদক আনা নেওয়ার কাজ করেন মধ্যবয়সী নারীরা । যাদের অধিকাংশের বয়স ৩০ থেকে ৪০ এর মধ্যে। জানা যায়, অধিকাংশ নারী মাদক কারবারি গাঁজা বিক্রি করেন । মূলত এসব মাদক দুই থেকে তিন ধাপে তাদের কাছে আসে তাই নারীরা খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতা। মাদক চক্রের বড় ডিলাররা কম পরিশ্রমে বেশি অর্থ আয় করার লোভ দেখিয়ে এসব নারীদের অবৈধ কাজে নামিয়েছেন। মাদক ব্যবসায়ী নারীদের অনেকেই পারিবারিকভাবে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। নিজের স্বামীকে মাদক ব্যবসায় সহায়তা করতে এ সর্বনাশী রাজ্যে পা বাড়াচ্ছেন তারা। এরপর সময়ের পরিক্রমায় নিজেও মাদক সম্রাজ্ঞী বনে গেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার এক নারী মাদক ব্যবসায়ী বলেন ।
আমার স্বামী নিজেও মাদক সেবন করত এ জন্য সংসারে অভাব অশান্তি লেগে থাকত। একসময় আমার স্বামী নিজেও এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়লে অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমাকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে । মাদক মামলায় আমরা দুইজনেই কারাগারে গিয়েছিলাম । গাইবান্ধায় অন্তত শতাধিক নারী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আছে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে । আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারির অভাবে বছরের পর বছর এসব নারী ব্যবসায়ীরা দিব্যি মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশের দুর্বল চার্জশিটের কারণে এরা ক’দিন জেল খেটে জামিনে ছাড়া পেয়ে আগের ব্যবসাতেই মনোনিবেশ করছেন। গাইবান্ধা সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবুল কাইয়ুম আজাদ বলেন,“নারীদের অপরাধে যুক্ত হওয়ার মূল কারণ দারিদ্র্য, পারিবারিক সহিংসতা এবং পেশাগত বিকল্পের অভাব।
সরকার ও এনজিওদের উচিত এই নারীদের বিকল্প আয়ের উৎস তৈরি করা।” এ বিষয়ে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলা বলেন , মাদকের সন্ধান যেখানেই পাওয়া যাবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদকের ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা দরকার। শুধু পুলিশ দিয়ে মাদক ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব নয়। মাদক সমাজের একটি বড় সমস্যা। মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজের শত্রু, এদের শনাক্ত করে সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত। সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষ মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেই মাদক বিষয়ে সরকারে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন সম্ভব।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।