বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতে দীর্ঘ বৈঠক
ভারতের পার্লামেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির এক বিশেষ বৈঠকে বিশেষজ্ঞ ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সামনে এগিয়ে নেওয়ার জোরালো সুপারিশ উঠে এসেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেস এমপি শশী থারুরের নেতৃত্বে এই কমিটির সঙ্গে চার শীর্ষ বিশেষজ্ঞের আড়াই ঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ আলোচনা হয়। বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভারতের ‘হারানো অবস্থান’ পুনরুদ্ধারের কৌশল নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
দ্য হিন্দু সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শংকর মেনন, বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সৈয়দ আতা হাসনাইন এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ডিন অমিতাভ মাত্তু উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র দ্য হিন্দুকে জানায়, সব সংসদ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সমস্যাগুলো সম্পর্কে গভীর সহমর্মিতা ও বোঝাপড়া প্রদর্শন করেছেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মেরামত করে তা এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তাঁদের মধ্যে সত্যিকারের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।
২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এই সম্পর্ক কীভাবে মেরামত করা যায়, সে বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ শুনতেই সংসদ সদস্যরা গতকাল আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন। সূত্র জানায়, বৈঠকে এটি ছিল সাধারণ উপলব্ধি যে বাংলাদেশ ও ভারত একটি সাধারণ ভাষা ও সংস্কৃতির বন্ধনে আবদ্ধ এবং বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো বৈরী প্রতিবেশী হিসেবে দেখা উচিত নয়।
সংসদ সদস্যরা আরও মত দেন, দুই দেশের মধ্যকার তিক্ততা নিরসনে ভারতের উচিত পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক কূটনীতি বা ‘সফট লঞ্চ’ শুরু করা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশও এই বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। গত সোমবার (২৩ জুন) কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম. রিয়াজ হামিদুল্লাহর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
স্থায়ী কমিটির আলোচনার বিষয়ে অবগত একটি সূত্র জানায়, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ একটি সাধারণ ভাষা ও সংস্কৃতিতে আবদ্ধ; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের উত্তরাধিকার এই সংযোগকে আরও দৃঢ় করেছে। নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে এই সংযোগকে ‘প্যারা-ডিপ্লোমেসি’র অংশ হিসেবে গণযোগাযোগ ও জনসাধারণের অংশগ্রহণমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা উচিত।
বৈঠকে সংসদ সদস্যরা বাংলাদেশে চীনের প্রভাব, বাংলাদেশ থেকে ভারতে ‘অবৈধ অভিবাসন’, এবং গত ১৯ জুন চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, এসব আলোচনা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভারতের নীতিনির্ধারকেরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে এবং আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আগ্রহী।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।