Loading Now

হাঙ্গেরিতে বিশাল জমায়েতে প্রধানমন্ত্রীকে যে বার্তা দিলেন সমকামীরা

হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট নিজেকে পার্টি টাউন হিসেবে প্রচার করে। সেই শহরে দ্যা এলিজাবেথ ব্রিজ, নদীর তীর এবং দানিয়ুবের উভয় পাড়ের শহরতলীর রাস্তায় রাস্তায় প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়লো পার্টি।

পেস্ট থেকে বুদায় নেচেগেয়ে গেলো প্রায় এক থেকে দুই লাখ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই তরুণ। ২০ মিনিটের এই পথ তাদের পাড়ি দিতে সময় লাগলো প্রায় তিন ঘণ্টা।

প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন, আর সেটিই এই কর্মসূচিতে বেশি মানুষকে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে বলে অংশগ্রহণকারীরা অনেকে জানিয়েছেন।

গত বছর এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল আনুমানিক ৩৫ হাজার মানুষ। এবার অনেকেই প্রধানমন্ত্রীকে হাস্যরস করে ব্যানার বহন করেছেন। গত পনের বছরে তিনি যে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে এবারের কর্মসূচি অনেকের কাছে ছিল শান্তিপূর্ণ প্রতিশোধ।

“একটি স্বৈরাচারকে কিভাবে চিনতে হয়, তা সম্পর্কে আমি আমার ইতিহাস ক্লাসে অনেক জেনেছি। তোমাকে আর প্রমাণ দিতে হবে না-ভিক,” একটি ব্যানারে এমনটি লেখা ছিল।

কিছু টি শার্টে অরবানের ছবিতে উচ্চ আইশ্যাডো ও লিপস্টিক দেখা গেছে।

এলজিবিটি কমিউনিটির এ বছরের কর্মসূচি মূলত মানবাধিকার ও সংহতি প্রকাশের উদযাপনে পরিণত হয়।

আমাদের ঠিক নিষিদ্ধ বলে মনে হচ্ছে না, বুদাপেস্ট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলছিলেন বুদাপেস্টের মেয়র জার্গেলি কারাকসনি।

আসলে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বড় আয়োজন করতে চেয়েছিলাম। আমাদের বার্তা পরিষ্কার। আমাদের ওপর তাদের কোনো ক্ষমতা নেই, বলছিলেন তিনি।

অংশগ্রহণকারীদের একজন হলেন লি অ্যান্ডারসন। তিনি বলেন, আমরা এখানে শুধু নিজেদের প্রচারের জন্য আসিনি- এটা আমাদের সবার জন্য মৌলিক অধিকারের বিষয়।

দেশটির পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী অরবানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের পাস করা একটি আইনের ভিত্তিতে এ অনুষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। এ আইন অনুযায়ী শিশুরা দেখতে পারে এমন জায়গা সমকামিতার প্রচার বা প্রমোশন নিষিদ্ধ।

পুলিশ একই কারণ দেখিয়ে শনিবারের এ সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

জবাবে শহরের মেয়র ভিন্ন একটি আইন দেখিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

প্রধানমন্ত্রী অরবান তখন শহরের আরেকটি প্রান্তে নতুন পুলিশ ও কাস্টমস অফিসারদের একটি স্নাতক কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কোনো অর্ডার নিজে নিজে আসে না। এটি তৈরি করতে হয়। কারণ এটি ছাড়া সভ্য জীবন হারিয়ে যায়, তিনি ওই অনুষ্ঠানে বলছিলেন।

এর আগে তিনি ও তার দলের কর্মকর্তারা নিজেদের সন্তান ও নাতি নাতনীদের নিয়ে ছবি পোস্ট করেন।

একটি ছবি পোস্ট করে তাদের দেখিয়ে দিন আমরা কী নিয়ে গর্বিত, আলেক্সান্দ্রা সেজেনটকিরালি হাঙ্গেরি লেখা একটি টিশার্ট পড়ে তোলা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন।

শনিবার পুলিশের উপস্থিতি ছিলো সংযত। র‍্যালির বিভিন্ন পয়েন্টে অস্থায়ী ক্যামেরা সেট করা হয়েছিল পুরো অনুষ্ঠান রেকর্ড করার জন্য।

গত ১৮ মার্চ পাস হওয়া নতুন আইনে পুলিশকে ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রাইড বা র‍্যালীতে অংশ নিলে ১৪ থেকে ৪৩০ ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান করা হয়েছে।

সরকার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক জলটান কিসজেলি বিবিসিকে বলেছেন, বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে।

আদালত যদি মেয়র ও প্রাইড সংগঠকদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী হয়তো আইনটি পরিবর্তনের কথা বলতে পারেন, বলছিলেন তিনি।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।