Loading Now

বীরগঞ্জে গ্রীষ্মের কাঁঠালের বাম্পার ফলন

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। এ দেশের উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া এ ফল চাষের জন্য উপযোগী।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ জনপদের বাড়ি, সড়কের ধারে, পুকুর পাড়ে ও বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে জাতীয় ফল রসালো কাঁঠাল।

শুধু গ্রামে নয়; শহরেও বিভিন্ন এলাকার গাছগুলোতে ধরেছে কাঁঠাল। প্রতিটি কাঁঠাল গাছের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত এখন শোভা পাচ্ছে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফলটি। দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল ও তরকারি হিসেবে কাঁঠাল যুগ যুগ ধরে কদর পেয়ে আসছে।

রসালো ফল কাঁঠালের বিচি উপজেলার মানুষের একটি ঐতিহ্যবাহী তরকারি। বিশেষ করে কাঁঠালের বিচি দিয়ে ভর্তা তৈরি করে খাওয়া যায়। যা সকলেই পছন্দ করে।

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের শাক ও কাঁঠালের বিচির সমন্বয়ে রান্না করা তরকারি এখানকার মানুষ তৃপ্তির সাথে ভাতের সাথে খায়।

সরেজমিনে বীরগঞ্জ পৌরসভা, নিজপাড়া, পাল্টাপুর, ভোগনগর ও সাতর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি কাঁঠাল গাছে ৮৯ থেকে ১৪০টির বেশি কাঁঠাল ঝুলছে। যদিও এখনও বাজারে পাকা কাঁঠাল সেভাবে উঠেনি, স্থানীয় হাট-বাজারে কাঁঠাল বিক্রি শুরু হয়েছে।

এছাড়া গবাদি পশুর জন্যও কাঁঠালের ছাল উন্নত মানের গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ১টি পৌরসভা ও উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের
বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি, সড়কের দু’ধারে, জঙ্গলের ভিতরেও ভাল ফলন হয়েছে কাঁঠালের। পুকুর বা দিঘীর পাড়ে কাঁঠাল গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে প্রচুর পরিমাণে জাতীয় ফল কাঁঠাল।

স্থানীয় বাজার গুলোতে এ বছর প্রচুর কাঁঠালের দেখা মিলছে, দাম ও তুলনামূলক ভাবে কম। কাঁঠাল এখন শুধু পাকা ফল হিসেবে নয়, কাঁচা অবস্থায়ও তরকারি এবং মাংস রান্নার উপকরণ হিসেবে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর বীজও ভাজা, রান্না কিংবা ভর্তা করে খাওয়া হচ্ছে-অর্থাৎ কাঁঠাল এখন ঘরে ঘরে নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।

কাঁঠাল একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল, যা নানা ধরনের ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। কাঁঠালে আছে ক্যালোরি (শক্তি), পানি, প্রোটিন, চর্বি, কার্বোহাইড্রেট, আঁশ, চিনি, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম,আয়রণ, ফসফরাস। এটি হজমে সহায়ক, ত্বক ও চুল ভালো রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নবীনগর সদর বাজারের কাঁঠাল বিক্রেতা মোমেন মিয়া জানান-বাজারে এবার কাঁঠালের পরিমাণ আগের চেয়ে বেশি।

এ বিষয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন-“বিগত বছরের তুলনায় এই বছর কাঁঠালের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় উপজেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে।

কৃষকরা খাওয়ার পাশাপাশি বাজারজাত করে লাভহচ্ছেন। বাংলাদেশে প্রচলিত কাঁঠালের জাত গুলোর মধ্যে স্থানীয় জাতের খাজা, গালা ও খাসিয়া কাঁঠাল। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত উন্নত জাত বারি কাঁঠাল-২ও বারি কাঁঠাল-২। সাধারণত একটি মাঝারি আকৃতির কাঠাঁল গাছে ১১০-২০০টি কাঠাল ধরে।

তিনি আরো বলেন, আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি বারি কাঁঠাল-১রোপনের জন্য। কারণ এটি অধিক লাভজনক ও বাজারযোগ্যচ। কাঁঠালের ভাল ফলন পেতে হলে বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি জমে গেলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং খরা মৌসুমে প্রতি ১৫-২০ দিন পরপর সেচ (পানি) দিতে হবে। বীরগঞ্জে এ বছরের কাঁঠালের ব্যাপক ফলনে ভোক্তারা পাচ্ছেন কাঁঠালের স্বাদ, পুষ্টি এবং অর্থের সাশ্রয়।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।