সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর বড় জামে মসজিদ ২৩৫ বছরের ঐতিহ্য

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর বড় জামে মসজিদ ২৩৫ বছরের ঐতিহ্য

13 July, 2025 | সময়: 5:31 pm

ঐতিহ্যবাহী এনায়েতপুর কেন্দ্রীয় বড় জামে মসজিদ সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামে ২৩৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়। এলাকার সাধারণ মানুষের প্রচেষ্টায় প্রায় দুই বিঘা জমির ওপর নির্মিত হয় মসজিদটি। জেলার অন্যতম প্রাচীন এই দ্বিতল মসজিদে একসঙ্গে প্রায় তিন হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। রয়েছে অজু ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। দৃষ্টি জুড়ানো এই মসজিদ দেখতে ও নামাজ পড়তে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বহু মানুষের সমাগম ঘটে। বিশেষ করে মসজিদের পাশেই বিশ্বমানের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও ক্যানসার সেন্টারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত রোগীর স্বজন ও বিদেশি ছাত্ররা জুমার নামাজ পড়েন। মহল্লাবাসীর উদ্যোগে রমজানে প্রতিদিন ইফতার ও ইতিকাফের মুসল্লিদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

মসজিদের মুসল্লি শহিদুল ইসলাম বলেন, দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটকে একটি বড় গম্বুজ ও চার কোনায় চারটি ছোট গম্বুজ রয়েছে। সীমানাপ্রাচীরে ৩০টি ছোট গম্বুজ ও পিলারগুলোয় লতাপাতার কারুকাজ খচিত আল্পনা যে কারও দৃষ্টি কাড়ে। শুরুতে কাশফুলের ছন ও বাঁশ দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করেন এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ। পরবর্তী সময়ে টিনের ছাউনি দিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়। সর্বশেষ ২০০৭ সালের দিকে নির্মাণ করা হয় পাকা দ্বিতলবিশিষ্ট স্থাপনা। বর্তমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদটি জেলার অন্যতম প্রাচীন মসজিদ।

প্রবীণ মুসল্লি হাজী সামান আলী বলেন, মুরুব্বিদের কাছে শুনেছি প্রাচীন স্থাপনা এই মসজিদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ আসত নামাজ পড়তে। তখন গ্রামে গ্রামে খুব বেশি মসজিদ ছিল না। এছাড়া এনায়েতপুর বড় জামে মসজিদের সেই সুউচ্চ মিনার থেকে এলাকার প্রখ্যাত মুয়াজ্জিন মরহুম বেলায়েত হোসেন মুখে আজান দিতেন। তার আজানের ধ্বনি জমিনে ছড়িয়ে পড়ত। তখন বড় মসজিদের আজানের অপেক্ষায় সেহরি ও ইফতারের সময়ের দিকে সবার দৃষ্টি ছিল। মুয়াজ্জিন প্রায় দেড় যুগ বিনা পারিশ্রমিকে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া নিজ অর্থায়নে প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতার মিনারটি নির্মাণ করেছিলেন।

এলাকার চিত্রশিল্পী মোশারফ হোসেন খান বলেন, কেজি মোড় থেকে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যাতায়াতকারী সবার নজর কাড়ে বড় মসজিদ। মসজিদের সুউচ্চ তিনটি মিনারসহ মেহরাবে বিশাল আকৃতির একটি গম্বুজ রয়েছে। এনায়েতপুর কেন্দ্রীয় বড় জামে মসজিদ ঐতিহ্যের স্মারক বহন করে। এ মসজিদের পশ্চিম-উত্তরে উপমহাদেশের প্রখ্যাত অলিয়ে কামেল খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রহ.)-এর মাজার রয়েছে। দেশি-বিদেশি অনেক জাকের এখানে নামাজ আদায় এবং ইবাদত-বন্দেগি করেন।

মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ আলী জানান, ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদে প্রায় আড়াই যুগ প্রতি বৃহস্পতিবার পবিত্র কুরআন খতমের ব্যবস্থা ধারাবাহিকভাবে চালু রয়েছে। গ্রামের সর্বস্তরের মুসল্লিদের সহযোগিতায় ১০-১৫ জন হাফেজ কুরআন তেলাওয়াত করেন। সারা বছর ধর্মীয় দিবসগুলো গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল হুদা জোদ্দার বলেন, বড় জামে মসজিদ আমাদের এলাকা শুধু নয়, উত্তরবঙ্গের একটি অন্যতম প্রাচীন জামে মসজিদ। বর্তমানে এটির সংস্কার ও দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো নির্মাণে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।