বুধবার

১৬ জুলাই, ২০২৫

১ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২০ মুহররম, ১৪৪৭

রাজশাহীতে আদালত চত্বরে ২ কাজী কতৃক প্রকাশ্যে এক নারী লাঞ্ছিত

রাজশাহীতে আদালত চত্বরে ২ কাজী কতৃক প্রকাশ্যে এক নারী লাঞ্ছিত

রাজশাহীর আদালত চত্বরে প্রকাশ্যেই এক নারীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন দুই নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী)। সম্পর্কে তাঁরা দুই ভাই। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার আমলী আদালতের সামনে অনেক মানুষের সামনেই এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী নারীর (৩৫) বাড়ি রাজশাহী মহানগরে। অভিযুক্ত দুজন হলেন-রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মোস্তফা হোসেন ভিক্টর ও তার ছোট ভাই একই উপজেলার বাকশিমইল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মোকাদ্দেম হোসেন শাওন।

এ দুই ভাইয়ের অপকর্মের শেষ নেই। তারা প্রতারকচক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভুয়া রেজিস্ট্রারে বিয়ে দেন বলে অভিযোগ আছে। ফলে কাবিননামা দিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন না অনেকে। এরা দুজন মোহনপুর উপজেলার দুটি ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকলেও ঘুরঘুর করেন আদালতপাড়ায়। বিয়ে করতে আসা তরুণ-তরুণীদের টার্গেট করে নিয়ে যান। শহরে শাওনের ব্যক্তিগত চেম্বারও আছে। সেখানে বিয়ের নামে প্রতারণা করার কারণে গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার মামলাও আছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে আদালত চত্বরে ওই নারীর সঙ্গে এ দুই ভাইয়ের কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে ওই নারী কাজী শাওনকে লাথি মারেন। এ সময় শাওনও ওই নারীর পেটে লাথি মারেন। বড় ভাই ভিক্টর এ সময় পাশে থাকলেও ছোট ভাই শাওনকে ধরেননি। এ সময় ওই নারী উত্তেজিত হয়ে উঠে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। অনেক মানুষও জড়ো হয়ে যায়। সবার সামনে প্রকাশ্যেই অশ্লীল ও অশ্রাব্য ভাষায় ওই নারীকে গালাগাল করেন শাওন। পরে পুলিশ এসে ওই নারী এবং দুই ভাইকে দুইদিকে পাঠিয়ে দেন।

ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ দুই ভাই প্রতারকচক্রের সদস্য। তারা অনেক নারীর সঙ্গে প্রতারণা করেন। তিনি জানান, সম্প্রতি তার বিয়ে হয়েছিল। বনিবনা না হওয়ায় বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তিনি দেনমোহরের ৩৮ লাখ টাকা পাবেন। এই টাকার জন্য দুই ভাই তাকে আপস করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। আপস করে মোটা অংকের টাকা তারা হাতিয়ে নিতে চান। এতে রাজি না হলে তাকে কাজী শাওন লাথি মারেন। এ ব্যাপারে তিনি আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

যোগাযোগ করা হলে কাজী মোস্তফা হোসেন ভিক্টর বলেন, ‘ওই মাহিলাই প্রথমে আমার ভাইকে লাথি মেরেছে। তারপর আমার ভাই লাথি মেরেছে। তবে এটা ঠিক হয়নি।’ তিনি নিজে ওই নারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। কথা বলতে কাজী মোকাদ্দেম হোসেন শাওনকে কয়েকদফা ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

আদালত চত্বরে প্রকাশেই দুই কাজীর এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুর রকিব সিদ্দিকী বলেন, ‘আদালত চত্বরে কোনো নারীকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি আমার জানা নেই। ভুক্তভোগী নারী যদি আমার কাছে অভিযোগ করেন তাহলে ওই দুই কাজীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইন ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।