বৃহস্পতিবার

১৭ জুলাই, ২০২৫

২ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২১ মুহররম, ১৪৪৭

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ত্রাণপ্রার্থীসহ নিহত আরও ৬১ ফিলিস্তিনি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ত্রাণপ্রার্থীসহ নিহত আরও ৬১ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের টানা বিমান হামলায় আরও অন্তত ৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত দুজন ত্রাণপ্রার্থী রয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) গাজার উত্তরাঞ্চলের শাতি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। স্থানীয় মেডিকেল সূত্রের বরাতে খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

একই দিন গাজার দক্ষিণাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) পরিচালিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে হামলায় দুইজন নারী নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ থেকে জিএইচএফ-এর কার্যক্রম শুরুর পর গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে অন্তত ৮৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ১৮ জন ও আহত ডজনখানেক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। অধিকাংশ হামলা হয়েছে গাজার উত্তরাঞ্চলে।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার ১৬টি এলাকার বাসিন্দাদের বাধ্যতামূলকভাবে স্থানত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। এই তালিকায় জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরও রয়েছে। ফলে হাজারো মানুষ আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে।

আল জাজিরার সাংবাদিক মোয়াত আল-কাহলুত জানান, ‘মানুষ গাড়ি, এমনকি গাধার গাড়ি ব্যবহার করে গন্তব্যহীনভাবে পালাচ্ছে। জ্বালানির অভাবে কেউই জানে না কোথায় যাবে বা পৌঁছাবে কি না। পুরো পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল এবং জনগণ চরম আতঙ্কে রয়েছে।’

গাজা শহরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি তাঁবুতে হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সিভিল ডিফেন্স।

অন্যদিকে গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ। সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, ২০২৪ সাল থেকে পরীক্ষিত প্রতি ১০ শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এই পরিস্থিতিকে ‘মানবসৃষ্ট ও পরিকল্পিত দুর্যোগ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এই মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ব্রাসেলসে এক বৈঠকে বসেন। সেখানে গাজায় চলমান সংকট অব্যাহত থাকলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।

ইইউ পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কাল্লাস জানান, ইসরায়েল-ইইউ সহযোগিতা চুক্তি লঙ্ঘনের কারণে ১০টি সম্ভাব্য পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চুক্তি স্থগিত, বাণিজ্য সীমিতকরণ, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসামুক্ত ভ্রমণ বাতিল।

তবে এসব প্রস্তাবের ব্যাপারে ইইউ দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যমত হয়নি। কাল্লাস বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়া নয়, বরং গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়ন নিশ্চিত করা।”

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।