হাবিপ্রবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় “জুলাই শহীদ দিবস-২০২৫” পালিত

হাবিপ্রবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় “জুলাই শহীদ দিবস-২০২৫” পালিত
দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ যথাযোগ্য মর্যাদার মধ্য দিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) জুলাই শহীদ দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ দুপুর ১২ টায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. এম. জাহাঙ্গীর কবির’র নেতৃত্বে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে শুরু হয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে যেয়ে শেষ হয়।
পরবর্তীতে জুলাই শহীদগণের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের লক্ষ্যে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়, মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা’র পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার, এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. এম. জাহাঙ্গীর কবির, কৃষি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান বাহাদুর, আইকিউএসি’র পরিচালক কৃষিবিদ প্রফেসর ড. সাইফুল হুদা, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. আবু হাসান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. এস.এম. এমদাদুল হাসানসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, হল সুপার, বিভিন্ন শাখার পরিচালকসহ অন্যান্য শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। এছাড়াও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ^াসী কর্মকর্তাদের সংগঠন অফিসার্স ফোরাম ও জাতীয়তাবাদী কর্মচারী পরিষদ।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে দিবসটি উপলক্ষ্যে হাবিপ্রবির মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়, বাণীতে তিনি বলেন, আজকের এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে ২৪’র জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যূত্থানে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, বিশেষ করে যাঁর পবিত্র রক্তে সর্বপ্রথম এ দেশের মাটি রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল সেই বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী, বীরত্ব ও সাহসের প্রতিক ‘শহীদ আবু সাঈদ’কে। যিঁনি পুলিশের বুলেটের সামনে নিজের বুক পেতে দিয়েছিলেন, যাঁর পবিত্র রক্তের বিনিময়ে মুক্ত হয়েছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি।
আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি মানবতার উজ্জ্বল নক্ষত্র ‘শহীদ মুগ্ধ’কে যিঁনি ফ্যাসিস্ট-হায়নার প্রশিক্ষিত ও সুসজ্জিত পেটুয়া বাহিনীর সন্মুখে দাড়িয়ে তৃষ্ণার্ত ছাত্র-জনতাকে পানি সরবরাহ করতে করতে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন এবং স্মরণ করছি দিনাজপুর সদর উপজেলার একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ‘শহীদ রাহুল’সহ শত শত বীর শহীদদের। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও নিজেদের জীবনবাজি রেখে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যূত্থানে অংশ নিয়ে যাঁরা চিরদিনের জন্য দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন এবং আহত হয়েছেন- আমি তাঁদের সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং তাঁদের রোগমুক্তি ও সুস্থ্যতা কামনা করছি।
গণঅভ্যূত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রী, শিশু-কিশোর-যুবক, শিক্ষক, পেশাজীবী, সাংবাদিক এবং দিনমজুরসহ সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাঁদের প্রতি যাঁরা দেশের অভ্যন্তরে এবং দেশের বাহিরে থেকে এ আন্দোলনকে বেগবান করতে সার্বক্ষণিক বিভিন্নভাবে দিকনির্দেশনা ও কর্মপরিকল্পনা করেন এবং তা বাস্তবায়নে নিজেদের সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। এছাড়াও, এ গণঅভ্যূত্থানে অংশগ্রহণকারী হাবিপ্রবি’র সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের প্রতিও সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আজকের এ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরশাসকের মসনদ নড়বড়ে হয়ে যায়। স্বৈরশাসক যখন আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে প্রভূর ইচ্ছায় করদ রাজ্য বানাতে গুম-খুন আর আয়নাঘর নামের বন্দিশালায় আটকে রেখে গোলামির জিঞ্জির পরিয়ে রাখার ঘৃণ্য ইচ্ছায় মেতেছিল এবং রক্তের হোলি খেলায় মত্ত ঠিক তখন নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা অসীম সাহস ও দৃঢ় মনোবলে বলিয়ান হয়ে নিজেদের জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন মরণপন লড়াইয়ে- জন্ম দেয় এক শান্তিপূর্ণ ও সফল বিপ্লব এবং পতন হয় ইতিহাসের ঘৃণিত স্বৈরশাসকের। যা ইতিপূর্বে বিশ^বাসী কখনও প্রত্যক্ষ করেনি।
তাই, জুলাই শহীদদের আত্মত্যাগের মহান আদর্শকে বুকে ধারণ করে অভ্যন্তরিণ ও বৈশি^ক নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ন্যয্যতা ও সমতার ভিত্তিতে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, কল্যাণকর, আত্মমর্যাদাশীল, সুখী-সমৃদ্ধ ও স্বর্নিভর বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় শপথ নিতে হবে। সজাগ থাকতে হবে কোন অবস্থাতেই যেন স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টের দোসররা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির কোন ক্ষতি করতে না পারে। পাশাপাশি, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক নানামুখী সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে রক্ষা করতে হবে আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমির পবিত্র স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব।
এছাড়াও বাদ যোহর সকল শহীদগণের স্মরণে কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।