সিরিয়ায় সংঘাত তীব্র, তবু আশা দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

সিরিয়ায় সংঘাত তীব্র, তবু আশা দেখছে যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। একই সময় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সুয়েইদা শহরে সরকারি বাহিনী ও দ্রুজ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে ও নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, ইসরায়েলি বাহিনী বুধবার দামেস্কে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রবেশপথের কাছে হামলা চালায়। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি সিরীয় সরকারি বাহিনীকে সুয়েইদা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আরেকটি হামলা চালানো হয় শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছে।
সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, এই হামলাগুলোতে অন্তত একজন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়েছে।
এই হামলাগুলো এমন এক সময় হলো, যখন সুয়েইদা শহরে স্থানীয় সুন্নি বেদুইন গোষ্ঠী ও দ্রুজ সংখ্যালঘুদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। দ্রুজদের সম্ভাব্য মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা ইসরায়েল দাবি করছে, তারা এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্যই হস্তক্ষেপ করছে।
এদিকে সিরীয় সরকার মঙ্গলবার শহরটিতে সেনা মোতায়েন করে এবং একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। তবে তা দ্রুত ভেঙে পড়ে এবং সংঘর্ষ আবার শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, সহিংসতার এই মাত্রা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি…আমি এইমাত্র সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি।
আমরা এই পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন এবং আশা করছি আজকের মধ্যেই কিছু আপডেট দিতে পারব। কিন্তু আমরা এটি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’
তুরস্ক
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলি হামলাগুলোকে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এসব হামলা সিরিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘সিরীয় জনগণের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস এবং বিশ্বসম্প্রদায়ের সঙ্গে একীভূত হওয়ার একটি ঐতিহাসিক সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগকে যারা সমর্থন করেন, তারা যেন সিরীয় সরকারের শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করেন।’
এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন একে পার্টির মুখপাত্র ওমের চেলিক হামলাগুলোর নিন্দা করে বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলা পুরো অঞ্চল এবং বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করছে।’
জিসিসি
বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে নিয়ে গঠিত গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) ‘তীব্রতম ভাষায়’ এই হামলাগুলোর নিন্দা জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে জিসিসির মহাসচিব জাসেম মোহাম্মদ আলবুদাইউই বলেন, ইসরায়েলি হামলা ‘সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিক আইন ও মানদণ্ডের অবমাননা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি’।
তিনি সিরিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি জিসিসির সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এই হামলার ধারাবাহিকতা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন উসকানি’ এবং সিরিয়া ও ওই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করে।
নরওয়ে
নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ ও স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রচেষ্টা ব্যাহত করতে পারে।
এস্পেন বার্থ এইদে এক্সে লেখেন, ‘সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান হামলা ও সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এই পরিস্থিতির বিস্তার সিরিয়ার নেতৃত্বাধীন শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিতে পারে।’
সব পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, তিনি ‘এই সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত’।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।