এআই চ্যাটবটকে যে ১০টি তথ্য দিলে হতে পারে বড় বিপদ!
এআই চ্যাটবটকে যে ১০টি তথ্য দিলে হতে পারে বড় বিপদ!
চ্যাটজিপিটি কিংবা অন্যান্য এআই চ্যাটবট আমাদের জীবনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অফিসের কাজ হোক বা পড়াশোনা, তথ্য খোঁজা কিংবা নিঃসঙ্গ মুহূর্তে আলাপ—বিভিন্ন কাজে এখন অনেকেই এগুলোর ওপর ভরসা করছেন। মানুষের মতো করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া এবং মুহূর্তেই সমাধান হাজির করার ক্ষমতার কারণে এআই চ্যাটবট হয়ে উঠেছে দৈনন্দিন জীবনের নীরব সহকারী।
তবে এই প্রযুক্তির পেছনে আছে কিছু অদেখা ঝুঁকি, যা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না।
চ্যাটবটকে যা কিছু বলা হয় তা হয়তো আর কখনো ‘সম্পূর্ণ গোপন’ থাকে না। অনেক সময় ব্যবহারকারীর দেওয়া তথ্য সংরক্ষিত হয়, বিশ্লেষণ করা হয়, এমনকি তা ভবিষ্যতে কোনোভাবে ফাঁসও হয়ে যেতে পারে। ফলে কিছু কিছু ব্যক্তিগত বা সংবেদনশীল তথ্য কখনোই এআই চ্যাটবটের সঙ্গে শেয়ার করা ঠিক নয়।
এই লেখায় আমরা জানব এমন ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা কখনোই চ্যাটবটের সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়—নিজের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বজায় রাখার স্বার্থে।
চলুন, জেনে নিই —
১. ব্যক্তিগত তথ্য
ভুলেও এআই চ্যাটবটকে যে ১০ তথ্য দেবেন না। আপনার পুরো নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর কিংবা ই-মেইল—এগুলো আলাদা মনে হলেও একত্র করলে সহজেই পরিচয় শনাক্ত করা যায়। এতে প্রতারণা, ফিশিং আক্রমণ বা ট্র্যাকিংয়ের ঝুঁকি তৈরি হয়।
২. গোপন কথা বা স্বীকারোক্তি
অনেকেই একাকিত্বে চ্যাটবটকে মন খুলে বলার চেষ্টা করেন।
তবে এআই কোনো বন্ধু বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নয়। আপনি যা বলছেন, তা সংরক্ষিত হতে পারে, পরবর্তীতে প্রশিক্ষণে ব্যবহার হতে পারে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসও হতে পারে। সুতরাং গোপন কিছু জানাতে চ্যাটবট নয়, বেছে নিন উপযুক্ত মানুষ।
৩. কর্মস্থলের গোপনীয় তথ্য
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন কর্মীদের সতর্ক করছে, কোনোভাবেই ব্যাবসায়িক গোপন তথ্য, নথিপত্র বা কৌশল চ্যাটবটে পেস্ট করা যাবে না। অনেক এআই চ্যাটবট ইনপুট ব্যবহার করে নিজেকে আরো উন্নত করে।
ফলে আপনার শেয়ার করা তথ্য বাইরে চলে যেতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
৪. আর্থিক তথ্য
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ বা সামাজিক নিরাপত্তা নম্বরের মতো তথ্য সাইবার অপরাধীদের কাছে মূল্যবান। চ্যাটবটে এসব তথ্য দিলে তা চুরি বা অপব্যবহারের শিকার হতে পারে।
৫. স্বাস্থ্য বা চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য
চ্যাটবটের মাধ্যমে চিকিৎসাবিষয়ক তথ্য জানতে চাওয়া অনেকের অভ্যাস। তবে এআই চিকিৎসক নয়, ভুল তথ্য দিতে পারে। এমনকি আপনার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য যেমন : প্রেসক্রিপশন, চিকিৎসার ইতিহাস বা বিমার তথ্য—শেয়ার করলে তা চুরি হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সর্বদা যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৬. অশ্লীল বা আপত্তিকর বিষয়বস্তু
অনেক চ্যাটবট আপত্তিকর বা অবৈধ বিষয়বস্তু শনাক্ত করে ব্লক করলেও, আপনি যা লিখছেন তা রেকর্ড হয়ে যেতে পারে। যৌন বা অবমাননাকর আলাপ, বেআইনি তথ্য—এসবের কারণে আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়ার আশঙ্কাও থাকে।
৭. পাসওয়ার্ড
কোনো চ্যাটবটের সঙ্গেই আপনার পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন না, এমনকি কথার ছলে হলেও নয়। এটি আপনার ই-মেইল, ব্যাংক বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে। পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের জন্য নিরাপদ পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো।
৮. আইনি জটিলতা বা মামলা
চুক্তি, মামলা-মোকদ্দমা বা আইনি বিবাদের মতো বিষয়ে চ্যাটবটের পরামর্শ নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। চ্যাটবট কখনোই একজন আইনজীবীর বিকল্প নয় এবং ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিতে পারে। আপনি যেসব তথ্য শেয়ার করছেন, সেগুলো ভবিষ্যতে আইনি সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৯. সংবেদনশীল ছবি বা নথি
পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা ব্যক্তিগত ছবি চ্যাটবটে আপলোড করা থেকে বিরত থাকুন। আপনি ডিলিট করলেও অনেক সময় সেই ফাইলের ডিজিটাল চিহ্ন থেকে যায়। এই ধরনের তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে এবং পরিচয় চুরির মতো বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
১০. যা আপনি অনলাইনে দেখতে চান না
যদি আপনি না চান যে কোনো কিছু ভবিষ্যতে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ুক, তাহলে সেটা চ্যাটবটকে বলবেন না। চ্যাটবটের আলাপ অনেক সময় গোপন থাকে না, এমনকি ভবিষ্যতেও ব্যবহার হতে পারে। তাই এআই চ্যাটবটের সঙ্গে আলাপকালে সতর্ক থাকতে হবে।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।