ঈশ্বরদীতে দেশে প্রথমবারের মতো ২৫ মুখ ও ৫০ হাত নিয়ে দেবী দুর্গা আসছেন

ঈশ্বরদীতে দেশে প্রথমবারের মতো ২৫ মুখ ও ৫০ হাত নিয়ে দেবী দুর্গা আসছেন
বাংলাদেশে এই প্রথমবার ২৫ মুখ ও ৫০ হাত নিয়ে দেবী দুর্গা আসছেন হরিজনপল্লীতে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রেলওয়ে হরিজন পল্লীর শ্রী শ্রী বারোয়ারী দুর্গা মন্দির কমিটির আয়োজনে এবারের দুর্গোৎসবে ভক্তরা পঁচিশ মাথা, পঞ্চাশ হাতওয়ালা চামুণ্ডারূপী দেবী দুর্গার আরাধনা করবে। যে দেবীর পঁচিশ মাথা, পঞ্চাশ হাত ছাড়াও থাকছে দুটি সিংহ, একটি অসুর ও একটি মহিষ।
পাবনা ঈশ্বরদীর পাকশীসহ আশপাশের দর্শকদের হরিজনপল্লী মণ্ডপমুখী করার উদ্দেশ্যে এমন প্রতিমা।
কারণ দেবী দুর্গার এমন রূপের আরাধনা বাংলাদেশে এর আগে কখনো কোথাও হয়নি। এর আগে এরূপে দেবী দুর্গার আরাধনা প্রথম হয়েছে দক্ষিণ ভারতের লম্বোদরপুরে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের রেলওয়ে হরিজনপল্লীতে বারোয়ারী মন্দিরে শেষ সময়ে প্রতিমাকে ফুটিয়ে তুলতে শিল্পী রং-তুলিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে প্রতিমাটি পূর্ণাঙ্গ রূপে আনতে আরো ২ দিন সময় লাগবে বলে জানান শিল্পী উকিল কামার।
পাকশী রেলওয়ে হরিজনপল্লী দুর্গোৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী রাজু বলেন, ‘২০২২ সালে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর লম্বোদরপুরের দুর্গাদেবীর ২৫টি মুখ আর ৫০টি হাতওয়ালা প্রতিমা সেখানের ভক্ত ও দর্শনার্থীদের মধ্যে বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। ভক্তরা চামুণ্ডাদেবীর আরাধনা করে তৃপ্তি লাভ করেছিল। সেই প্রত্যাশা থেকেই এবার আমরা প্রতিমার এই রূপ দিয়েছি। আশা করছি, পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর পাকশীসহ আশপাশের এলাকায় পূজার মূল আকর্ষণ হবে দেবী দুর্গার এই চামুণ্ডারূপ।
তাই এবার রণংদেহী অবতারে দেবীকে সামনে আনা হয়েছে। মণ্ডপের মুখেই রীতি মেনে দুটি সিংহ থাকছে।’
শিল্পী উকিল কামার বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১৮-২০ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছি। কিন্তু ১৬ ফুট উচ্চতার ২৫টি মুখ ও ৫০টি হাতওয়ালা এমন দেবীমূর্তি আমি আগে কখনোই করিনি। এই প্রতিমা তৈরির কাজটি আমার নিকট অতি চ্যালেঞ্জিং ছিল।
দেবীর পঁচিশটা মাথা পরপর লাগাতে হয়েছে। পরে সেই অনুযায়ী হাত সংযোজন করতে হয়েছে।’
দেবী দুর্গার এরূপের বিষয়ে অনলাইন ঘেঁটে দেখা গেছে, এর আগে বাংলাদেশে কোথাও ২৫ মুখ ও ৫০ হাতওয়ালা বিশিষ্ট রূপে দুর্গোৎসব হয়নি। তবে উত্তর কলকাতার বরানগরের নেতাজি কলোনি লোল্যান্ড দুর্গোৎসবে ২০২৪ সালে ২৩ মুখ ও ৪২ হাতের দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছিল। এর আগে ২০২২ সালে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর লম্বোদরপুর মন্দিরে ২৫ মুখ ও ৫০ হাত বিশিষ্ট দুর্গাপ্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছিল।
হরিজনপল্লী মন্দিরের সম্পাদক শ্রী সাজু বলেন, ‘অসুর নিধনে স্বর্গের দেবতারা দুর্গা দেবীকে সৃষ্টি করেছিলেন। নিজেদের অস্ত্রে সুসজ্জিত করে তাকে রণক্ষেত্রে পাঠিয়েছিলেন। রণংদেহী দুর্গার সামনে তখন শুধু মহিষাসুর। নানা ছলে ও কৌশলে অসুর আসছে মা দুর্গাকে আক্রমণ করতে। তাই মায়ের ক্ষিপ্রতা যেন ২৫টি মাথার মতো ঘুরছে। দশ হাত তখন ৫০ হাতের শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই মণ্ডপে থাকছে একটি অসুর ও একটি মহিষাসর। আর দুটি সিংহযোগের দেবীর আসন। এভাবেই রণক্ষেত্রে দুর্গার যুদ্ধংদেহী মেজাজটিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হবে।’ তার প্রত্যাশা, এবার অন্য রকম প্রতিমা দেখতে পাকশীর রেলওয়ে হরিজনপল্লীতে উপচে পড়া ভিড় হবে।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।