উত্তর কোরিয়ার কাছে ২ টন ইউরেনিয়াম মজুদ আছে: দ. কোরিয়া

উত্তর কোরিয়ার কাছে ২ টন ইউরেনিয়াম মজুদ আছে: দ. কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ায় প্রায় দুই হাজার কিলোগ্রাম (প্রায় দুই টন) উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার একীকরণ মন্ত্রী চুং ডং-ইয়ং সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। এএফপি-এর প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার একীকরণ মন্ত্রণালয় হলো দেশটির সরকারের একটি নির্বাহী বিভাগ।
যার মূল লক্ষ্য, কোরিয়ার পুনর্মিলনকে উৎসাহিত করা। ১৯৬৯ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট পার্ক চুং-হির শাসনামলে জাতীয় একীকরণ বোর্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে এটি বর্তমান মর্যাদা লাভ করে। মন্ত্রণালয়টি আন্তঃকোরীয় সংলাপ, বিনিময় এবং সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এর সদর দপ্তর সিউলের জংনো জেলার আবস্থিত।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বহুদিন ধরেই বলছে, উত্তর কোরিয়া ‘উল্লেখযোগ্য’ পরিমাণে অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করে রেখেছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অন্যতম প্রধান উপাদান। তবে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ্যে নিশ্চিত করা কঠিন।
একীকরণ মন্ত্রী চুং ডং-ইয়ং বলেন, ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস (এফএএস) ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের অনুমান অনুযায়ী উত্তর কোরিয়া বর্তমানে ৯০ শতাংশের বেশি বিশুদ্ধতায় প্রায় ২ হাজার কিলোগ্রাম উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সংরক্ষণ করছে।
তিনি আরো জানান, ‘এ মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার ইউরেনিয়াম সেন্ট্রিফিউজ চারটি স্থানে কাজ করছে। একটি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য মাত্র ৫ থেকে ৬ কেজি প্লুটোনিয়ামই যথেষ্ট।’
উত্তর কোরিয়ার কাছে যে ২ হাজার কেজি উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, সেটি বিপুল সংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য যথেষ্ট।’ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পারমাণবিক বোমার মূল উপাদান। পারমাণবিক চুল্লিতে এটি দহনের মাধ্যমে প্লুটোনিয়ামে রূপান্তরিত করা যায়।
অস্ত্রের ক্ষেত্রে ইউরেনিয়ামের জন্য ৯০ শতাংশের বেশি সমৃদ্ধকরণ প্রয়োজন।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএই) হিসাব অনুযায়ী, একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ৪২ কেজি উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। সেই হিসেবে উত্তর কোরিয়ার ২ হাজার কেজি ইউরেনিয়াম দিয়ে প্রায় ৪৭টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।
চুং বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক উন্নয়ন বন্ধ করা এখন জরুরি।’ তবে তিনি যুক্তি দেন, কেবল নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এটি থামানো যাবে না। এর একমাত্র সমাধান হতে পারে, পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সরাসরি শীর্ষ বৈঠক।
সরকারি কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সম্প্রতি বলেছেন, তিনি আলোচনায় রাজি, যদি তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার বজায় রাখতে পারেন। ২০০৬ সালে প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পর থেকে নিষিদ্ধ অস্ত্র কর্মসূচির জন্য জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটি তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।
সিউলের গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, উত্তর কোরিয়ার একাধিক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র আছে। এর মধ্যে ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক স্থাপনাটিও রয়েছে, যা আলোচনার পর পিয়ংইয়ং বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও ২০২১ সালে এটি পুনরায় সক্রিয় করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, আগের প্রশাসনগুলো উত্তর কোরিয়াকে ‘প্রধান শত্রু’ ঘোষণা করে এবং প্রথমে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ওপর জোর দিয়ে কার্যত পিয়ংইয়ংকে তার পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়ানোর সুযোগ দিয়েছে।
গত জুনে দায়িত্ব নেওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং তার পূর্বসূরীর তুলনায় উত্তর কোরিয়ার প্রতি আরো কট্টর অবস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তিনি জাতিসংঘে বক্তব্য রাখার সময় উত্তরের সঙ্গে উত্তেজনার ‘দুষ্টচক্র’ ভাঙার অঙ্গীকারও করেছেন।
সূত্র : এএফপি
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।