পার্বতীপুরে বিল্ডিং থেকে পড়ে শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর

পার্বতীপুরে বিল্ডিং থেকে পড়ে শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর

25 September, 2025 | সময়: 10:07 pm

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের পার্বতীপুরে সি ওয়াই মোল্ডিং (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের একতলা বিল্ডিংয়ে ওয়েল্ডিয়ের কাজ করার সময় পড়ে মিলন রায় (২৫) নামে শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে, পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের মনপুরা এলাকার সি ওয়াই মোল্ডিং (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড ভিতরে ওয়েল্ডিং কাজ করার সময়। মিলন দীর্ঘ এক বছর ধরে ওই ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করছিলেন।

দৈনিক হাজিরা ভিত্তিত্বে কাজ করলে ১৫ দিন পরে টাকা দেয়া হতো। পরিবারে মিলনসহ বাবা জিতেন্দ্র রায়, মা শম্পা রানী ও ছোট ভাই তাপস রায়। মিলন পরিবারের এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তার আয়ে পুরো পরিবার চলতো। সেই মিলন আজ দুনিয়াতে নেই বলে, মা শম্পা রানী আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে আসছে।

মিলনের মৃত্যুতে গ্রামের শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঠনঠনিয়াপাড়া গ্রামের পরিমল চন্দ্র বলেন, মিলন ছিলো আমার বন্ধু, সে শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের ছিল। প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলতো না। সেই মিলন আজ নেই ভাবতে পারছি না।

পার্বতীপুর শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দুরে মেঠোপথ ধরে প্রত্যন্ত গ্রাম উপজেলা বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের বাঘাচড়া ঠনঠনিয়া পাড়া।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মিলনের বাবা-মা ও বোনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় গ্রামের প্রতিবেশি পরিমল চন্দ্র জানায়, একতলা বিল্ডিং থেকে পড়ে মিলন আহত হয়েছে। তাকে পাশ^বর্তী উপজেলা সৈয়দপুর কুন্ডুল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

সেখানে বাবা জিতেন্দ্র রায় (৬৫) ও মা শম্পা রানী (৫০) ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন মিলনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিকেল ৩টায় খবর আসে মিলন মারা গেছে। মিলনের মৃত্যুর খবরে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাত ৩টায় ক্যানেলের বাজার দেবীডুবা শ^শ্নানে তাকে দাহ করা হয়।

ক্রদনরত অবস্থায় মা শম্পা রানী (৫০) বলে, ছেলের চৌখত ওয়েল্ডিয়ের আলো পড়লে চোখে কিছু দেখে না, ২০ ঘন্টা পর ছইটা (ছেলে) আবার ভালো হয়ে যায়। প্রত্যেকদিন ছইলটা মোর সকাল ৮টায় বাড়ী বের হয়ে যায়, আইসে রাত ১০টায়। ওয় আছিল মোর সংসারে সব। এখন মুই ক্যানকা করি চলিম।

এবিষয়ে জানতে চাইলে, মিলনের বড় বোন রতœা রায় (৩২) বলেন, আমাদের হিন্দু শাস্ত্রে নিয়ম হচ্ছে, কেউ মারা গেলে তাকে দ্রুত দাহ করতে হয়। তাই করা হয়েছে। ঘটনার দিন বিকেলে কোম্পানী থেকে ম্যানেজার ও সুপারভাইজার বাড়ীতে এসে সৎকাজের জন্য ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে। আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভাই মিলনের শ্রাদ্ধ আয়োজন করা হয়েছে।

এব্যাপারে সি ওয়াই মোল্ডিং (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজার আহম্মেদ মুন্নার মতামত জানতে, গত বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার তার মোবাইর নম্বরে একাধিবার ফোন দেয়া হলে রিসিভ না করায় তার মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি। সরাসরি আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যোগাযোগের চেষ্টা করা। গেটে কোম্পানীর নিরাপত্তা ইনচার্জ সায়েদ জানান, এমডি স্যার এসেছেন, তাই মিটিং চলছে।

গতকাল বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানায় গেলে, পার্বতীপুর মডেল থানার তদন্ত (ওসি) মো: জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, এধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেটা আপনার কাছেই জানলাম। তারপরও আপনি ওসি সাহেবের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন।

এব্যাপারে পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন কে মোবাইলে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

আজ বৃস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন অপমৃত্যু মামলা হয়নি। ইতিমধ্যে শ^শানে সৎকাজ সম্পন্ন করেছে নিহতের পরিবার।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।