লাহোরে পাবজির প্রভাবে পরিবারের ৪ জনকে হত্যা, ১০০ বছরের কারাদণ্ড কিশোরের

লাহোরে পাবজির প্রভাবে পরিবারের ৪ জনকে হত্যা, ১০০ বছরের কারাদণ্ড কিশোরের

25 September, 2025 | সময়: 2:31 pm

অনলাইন গেম পাবজির প্রভাবে মা, ভাই ও দুই বোনকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে এক কিশোরকে ১০০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের লাহোর সেশন কোর্ট। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অতিরিক্ত জেলা ও সেশন বিচারক রিয়াজ আহমেদ তার রায়ে অভিযুক্ত কিশোরকে ৪০ লাখ রুপি জারিমানাও করেছেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে লাহোরের কাহনা এলাকায় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। অভিযুক্ত কিশোর আলি জাইন (বর্তমান বয়স ১৭) ঘটনার দিন রাত ২টার দিকে পরিবারের সদস্যদের ওপর গুলি চালায়। এতে তার মা, ভাই এবং দুই বোন নিহত হন।

এই ঘটনায় কাহনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বিচার চলাকালে প্রসিকিউটর হাবিবুর রহমান সাক্ষী ও প্রমাণ উপস্থাপন করেন।

রায় ঘোষণাকালে বিচারক রিয়াজ আহমেদ বলেন, অপরাধের ভয়াবহতার কারণে আলি জাইনকে চারটি যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হচ্ছে, যা মোট ১০০ বছরের কারাদণ্ডের সমান।

তবে আসামির বয়স বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ৪০ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়।

ঘটনা যা ঘটেছিল

২০২২ সালের জানুয়ারিতে লাহোর পুলিশ এ হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করে।

এ ঘটনায় নিহতরা হলেন—লেডি হেলথ ওয়ার্কার (এলএইচডব্লিউ) নাহিদ মুবারক (৪৫), তার ছেলে তাইমুর সুলতান (২০), কন্যা মাহনূর ফাতিমা (১৫) এবং ছোট মেয়ে জান্নাত (১০)।

পুলিশের দাবি, নিহত নাহিদের ছেলে আলি জাইন (তৎকালীন বয়স ১৪) জনপ্রিয় অনলাইন গেম পাবজির নেশায় আসক্ত ছিল এবং এর প্রভাবে নিজের মা ও তিন ভাইবোনকে হত্যা করে।

আলি তার অপরাধ স্বীকারও করে। সে নিয়মিত নিজের ঘরে বসে দীর্ঘ সময় ধরে পাবজি খেলত। পুলিশের এক কর্মকর্তার দাবি, ‘গেমে বারবার ব্যর্থ হয়ে সে মানসিকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।’

ঘটনার দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলেও লক্ষ্য পূরণ করতে না পারায় সে মায়ের লাইসেন্সকৃত পিস্তল নিয়ে ঘরে ঢুকে প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় মাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর দুই বোনকে গুলি করে। গুলির শব্দ শুনে বড় ভাই ঢুকলে তাকেও গুলি করে হত্যা করে আলি। এরপর উপরের তলায় গিয়ে বিশ্রাম নেয় এবং পরে বাড়ি থেকে বের হয়।

বাড়ি থেকে বেরিয়ে আলি পিস্তলটি পাশের একটি নর্দমায় ফেলে দেয় এবং পরে নিজের ঘরে ফিরে গিয়ে এমন ভান করে যে, ঘটনাটি ঘটার সময় সে ঘুমিয়ে ছিল।

প্রথমে পুলিশের সন্দেহ হয়েছিল আলির ওপর, কারণ ঘটনার পর তার আচরণ স্বাভাবিক ছিল না। কয়েকদিন পর্যবেক্ষণের পর এবং তদন্ত সম্পন্ন করে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং অবশেষে তার বিরুদ্ধেই মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

তথ্যসূত্র: সামা টিভি

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।