তিস্তাসহ ৩ নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে, ৪ জেলায় সাময়িক বন্যার পূর্বাভাস

রংপুর বিভাগের তিস্তা, দুধকুমার ও ধরলা নদ–নদীর পানি আগামী দুই দিন দ্রুত বাড়তে পারে। আর এতে এসব নদ–নদীসংলগ্ন এলাকায় সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। দেশের ভেতরে এবং উজানে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

রোববার (৫ অক্টোবর) সকালে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া সতর্কবার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়।

দুই দিন আগেই বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এটি স্থল গভীর নিম্নচাপ হয়। তবে গতকাল থেকেই এটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি এখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা ও বিহার রাজ্যে অবস্থান করছে। তবে এর প্রভাব পড়েছে ভারতের এসব রাজ্যসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে। আজও রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বড় এলাকাজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলেছে আবহাওয়া অফিস।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ভেতরে রংপুর বিভাগে এবং উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে এবং সংলগ্ন উজানে ভারতের রাজ্যগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদ–নদীর পানি আগামী দুই দিন দ্রুত বাড়তে পারে। এসব নদ–নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদ–নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

উত্তরের এসব নদ–নদীর পাশাপাশি সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস নদ–নদীর পানি আগামী দুই দিন বাড়তে পারে। এসব নদ–নদীর কাছাকাছি নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তরের আরও কয়েকটি নদ–নদী যেমন করতোয়া, যমুনেশ্বরী, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, আত্রাই, আপার-আত্রাই, মহানন্দা, ঘাঘটের পানিও আগামী দুই দিন বাড়তে পারে।

বিস্তারিত পূর্বাভাস: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের রংপুর বিভাগ এবং উজানে ভারতের পশ্চিম- ও সিকিমে ভারি থেকে অতি-মারি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়। উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত। দেশের অভ্যন্তরে। পঞ্চগড় ১১৮ মি.মি., ডালিয়া (নীলফামারী) ৮৫ মি.মি, পাটেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) এর মি.মি. এবং উজানে দার্জিলিং পেশ্চিম বঙ্গ) ২৫১ মি.মি. কোচবিহার (পশ্চিম বঙ্গ) ১৯০ মি.মি., জলপাইগুড়ি (পশ্চিম বঙ্গ) ১৭২ মি.মি., শিলিগুড়ি (পশ্চিম বঙ্গ) ১৩৪ মি.মি. পাসিঘাট কেরুণাচল প্রদেশ। ৮৯ মি.মি, গ্যাংটক (সিকিম) ৮৮ মি.মি.।
তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি। খবর ইত্তেফাক

৪ অক্টোবর, সকাল ০৯:০০ টা থেকে আজ ৫ অক্টোবর বিকাল ০৩.০০ টা পর্যন্ত ৬৯ সে.মি বৃদ্ধি পেয়েছে, বর্তমানে পানি সমতল ৫২.৪৮ মিটার (বিকাল ০৩:০০ ঘটিকা) যা বিপদসীমার ০১ সে.মি নিচে অবস্থান করছে। গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তা নদীর উজানে দোমুহনীতে ১৫৮ সে.মি এবং পজলডোবাতে ২২০ সে.মি বৃদ্ধি পেয়েছে। দোমুহনীর বর্তমান পানি সমতল ৮৬.৫০ মিটার (দুপুর ০২:০০ ঘটিকা), যা বিপনর্দমার এর দে.ছি. উপরে এবং গজলডোবার বর্তমান পানি সমতল ১১০.৫৫ মিটার (দুপুর ০২:০০ ঘটিকা)। দুটান আবহাওয়া ও পানি বিজ্ঞান সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ‘ওয়াংচু” নদীর পানি সমতল নদীতে অবস্থিত “তালা” ড্যামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর প্রভাবে ধরলা ও দুধকুমার নদীয় উজানে ভারতে পানি সমতল যুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান গণমাধ্যমকে বলেন, তিস্তা ও অন্য নদ–নদীর পানি বাড়তে পারে হঠাৎ বৃষ্টির কারণে। এতে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তবে দুই দিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বৃষ্টিও কমে আসতে পারে।