পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর গভীর সংকটে

পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর গভীর সংকটে

7 October, 2025 | সময়: 1:24 pm

পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর বা আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (এজেকে) বর্তমানে এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির (জেএএসি) নেতৃত্বে শুরু হওয়া টানা ধর্মঘট ও অবরোধে এই অঞ্চলে জীবন প্রায় থমকে গেছে। বাজার-দোকান বন্ধ, পরিবহন বন্ধ, সর্বত্র বিক্ষোভ চলছে কড়া নিরাপত্তায়। ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা স্থগিত করে জনগণকে বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।

ইতিমধ্যে ৯ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছেন—যা প্রমাণ করে বলপ্রয়োগ কখনোই সুশাসনের বিকল্প নয়।
দ্য ডিপ্লোম্যাটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই আন্দোলনের কেন্দ্রে রয়েছে জেএএসি-এর ৩৮ দফা দাবি, যেখানে বিদ্যুতের অতিরিক্ত মূল্য, খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি এবং অভিজাত শ্রেণির সুবিধাভোগী অবস্থানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। কেন্দ্র ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হলেও অচলাবস্থা কাটেনি। দাবিভিত্তিক প্রতিবাদ এখন পরিণত হয়েছে বৃহত্তর গণ-আন্দোলনে, যা এজেকে’র রাজনৈতিক বৈধতা ও প্রতিনিধিত্ব সংকটকে প্রকট করে তুলেছে।

এই প্রেক্ষাপটে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব সমস্যার সমাধানের বদলে নাটকীয়তা বেছে নিয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজা ফারুক হায়দার খান ইসলামাবাদে এক সর্বদলীয় বৈঠকে একটি কথিত ‘সাইফার নথি’ প্রকাশ করেন, যা তিনি ভারতের সঙ্গে আন্দোলনের যোগাযোগের প্রমাণ হিসেবে দাবি করেন। কিন্তু উপস্থিত অধিকাংশ নেতা তা অবিলম্বে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এমন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুধু জনগণের ন্যায্য আন্দোলনকে দুর্বল করার কৌশল।

পরবর্তী সময়ে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানে পাল্টা সরকারপন্থী সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনাও হয়—যা জনগণের ক্ষোভকে অন্যদিকে ঘোরানোর স্পষ্ট প্রচেষ্টা ছিল।

কিন্তু এতে সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা আরো ক্ষুণ্ণ হয়। জনসাধারণের কাছে এটি প্রমাণ করেছে, সরকার জনগণের বাস্তব দাবিকে স্বীকার করার বদলে ষড়যন্ত্রতত্ত্বে আশ্রয় নিচ্ছে।
অর্থনৈতিক মন্দা, পশ্চিম সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ এবং ভারতের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যেই এজেকে-তে এই অস্থিরতা পাকিস্তানের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এজেকের বিক্ষোভ কোনো ভর্তুকি বা বিলের ব্যাপার নয়; এটি মর্যাদা, প্রতিনিধিত্ব ও দায়বদ্ধতার দাবি। আটজন নিরীহ নাগরিকের মৃত্যু এই সংকটের মানবিক মূল্যকে মনে করিয়ে দেয়।

সাইফার নাটক, পাল্টা র‍্যালি বা পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচার— কিছুই মূল সমস্যাকে ঢাকতে পারবে না। কাশ্মীরের জনগণ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, তারা সম্মান ও অংশগ্রহণ চায় এবং কোনো ষড়যন্ত্রতত্ত্ব তাদের কণ্ঠরোধ করতে পারবে না।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।