জনবল সংকটে টিকাদান ব্যাহত, গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কা

জনবল সংকটে টিকাদান ব্যাহত, গবাদিপশু নিয়ে শঙ্কা

8 October, 2025 | সময়: 7:57 pm

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স টিকা প্রদানে ধীরগতি। শঙ্কায় রয়েছেন পশু মালিক ও খামারিরা। এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ হাজার গবাদি পশুকে টিকা দেয়া হয়েছে। টিকার চাহিদা ৩ লাখ হলেও বরাদ্দ এসেছে মাত্র ২৮ হাজার ৯০০টি। যদিও উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর বলছেন, টিকার সংকট নেই, রয়েছে জনবল সংকট। প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাসহ মাত্র পাঁচজন জনবল দিয়ে চলছে অফিসের কার্যক্রম।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পনের ইউনিয়ন, একটি পৌরসভায় গরু, ছাগল ও ভেড়াসহ মোট গবাদি পশুর সংখ্যা ২ লাখ ৯১ হাজার ৬০৮টি। এরমধ্যে গরু ১ লাখ ৩৭ হাজার এবং ছাগল ও ভেড়া ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬০৮টি।

এ পর্যন্ত টিকা বরাদ্দ ২৮ হাজার ৯০০টি। ইতোমধ্যে টিকা প্রদান করা হয়েছে ২৪ হাজার গবাদি পশুর মাঝে। ঢাকাস্থ প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের মনিটরিং টিম পরিদর্শন করে আরও ১ লাখ টিকা বরাদ্দ দিয়েছেন। আজ-কালের মধ্যে পাওয়া যাবে।

জনবল সংকটে টিকা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর। বিগত দিনের বিভিন্ন প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের মাধ্যমে টিকা প্রদান করছেন। অফিসের তথ্যমতে এ পর্যন্ত অ্যানথ্রাক্স আক্রান্তে গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে ১৩টি। তবে এলাকাবাসি, কৃষক ও খামারিদের মতে এর সংখ্য দেড় শতাধিক।

পশ্চিম বেলকা গ্রামের আমিনুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার এই এলাকায় টিকা দিয়েছেন। কিন্তু অনেকের গরু বাদ পড়েছে। তিনি বলেন তার একটি গরুকে টিকা দেয়া হয়নি। রাত হতে ওই গরুটি আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন টিকা দেয়ার পরও আক্রান্ত হচ্ছে।

ধুমাইটারি গ্রামের বেলাল মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত তার গ্রামে পশু-পালন অফিসের কেউ আসে নাই। গরু-ছাগল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ওই এলাকাবাসি। দ্রুত টিকা প্রদানের দাবি তাদের।

তারাপুর গ্রামের শফিকুল মিয়া বলেন, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ছেলেদের দিয়ে টিকা দেয়া হচ্ছে। কতটুকো সঠিকভাবে তারা টিকা দিচ্ছেন, তা ভাববার বিষয়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দে বলেন, অ্যানথ্রাক্স টিকার কোন সংকট নেই। তবে জনবল সংকট বয়েছে। যে এলাকায় বেশি আক্রান্ত, সেই এলাকায় জরুরী ভিত্তিত্বে টিকা দেয়া হচ্ছে। যারা টিকা দিচ্ছেন তারা প্রশিক্ষিত। নতুন করে আর কোন গবাদি পশুর মৃত্যুর খবর জানা যায়নি।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর বুধবার পর্যন্ত অ্যানথ্রাক্সের চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা হলেন- মধ্যে বেলকা গ্রামের সামিউল ইসলাম, সাহাদৎ হোসেন, সবুজ মিয়া, বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আজিজল হক, পশ্চিম বেলকা গ্রামের ভূট্ট মিয়া, আতিকুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, বেলকা গ্রামের মোজাহার আলী, মোজাফ্ফর হোসেন, খতিব মিয়া, ফরিদুল হক, রুজিনা বেগম, কিসামত সদর গ্রামের মোজা মিয়া, মাহবুর রহমান, শাফিকুল ইসলাম, স্বাধীন মিয়া, সকিনা বেগম, তাইজল মিয়া, শিশু ছায়ফান বেগম, আফরিন বেগম, ছালদিয়া ইসলাম, ও রইসুল মিয়া। এদের মধ্যে রুজিনা বেগম, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন, বুধবার নতুন করে আর কেউ অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসে নাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন. আমরা আশাবাদী অল্প দিনের মধ্যেই উপজেলা থেকে অ্যানথ্রাক্স রোগ সংক্রমনের মাত্রা নিয়মিত করা সম্ভব হবে।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।