যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে লাখো মানুষ ‘নো কিংস’ নামে আন্দোলনে অংশ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। তাদের মূল বার্তা ছিল—দেশটি ক্রমশ কর্তৃত্ববাদী শাসনের দিকে যাচ্ছে, অথচ যুক্তরাষ্ট্রে কোনো রাজা বা একনায়ক শাসন চলতে দেওয়া যাবে না।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে একই দিনে এই বিক্ষোভ হয়, যা চলতি বছরের জুন মাসে আয়োজিত ঐতিহাসিক বিক্ষোভের দ্বিতীয় সংস্করণ। আগেরবারের মতো এবারও এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পরিণত হয়।
ছোট বড় শহর, নগর ও গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়ে নানা স্লোগান, ব্যানার ও প্রতীক নিয়ে মিছিলে অংশ নেয়। কেউ সঙ্গীত ব্যান্ড নিয়ে আসে, কেউ বিশাল এক ব্যানারে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রস্তাবনা লিখে তাতে স্বাক্ষর করে।
এছাড়া অনেকেই ব্যাঙের মতো ফোলানো পোশাক পরে আসে—যা প্রথমে ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে শুরু হয়ে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
মাত্র ছয় মাস আগেও, ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে যেন হতাশ ও বিভ্রান্ত ছিল।
হোয়াইট হাউস এবং কংগ্রেসের উভয় কক্ষেই রিপাবলিকানদের আধিপত্যের পর তাদের অবস্থা ছিল দুর্বল। কিন্তু এখন দৃশ্যপট পাল্টেছে।
‘ইনডিভিজিবল’ নামের মূল সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, ‘আমরা এখন ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কিছু দৃঢ়তা দেখতে পাচ্ছি। এই মুহূর্তে তাদের করা সবচেয়ে বড় ভুল হবে আত্মসমর্পণ করা।’
শিকাগোর গ্রান্ট পার্কের বাটলার ফিল্ডে অন্তত ১০,০০০ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন, অনেকেরই হাতে ছিল ট্রাম্প-বিরোধী প্ল্যাকার্ড, কেউবা ফেডারেল অভিবাসন কর্মকর্তাদের সমালোচনামূলক পোস্টার বহন করছিলেন। টিভি চ্যানেলগুলো সরাসরি সম্প্রচারের সময় দর্শকদের আগাম সতর্ক করে জানায়—তারা প্রদর্শিত ভাষার জন্য দায়ী নয়। পরবর্তীতে শিকাগো ট্রিবিউন জানায়, অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়েছে।
ইলিনয় রাজ্যের প্রতিনিধি জোনাথন জ্যাকসন মঞ্চে উঠলে ভিড় একযোগে ‘ফা.. ডোনাল্ড ট্রাম্প’ শ্লোগানে ফেটে পড়ে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ৭২ বছর বয়সী গিনি এসচব্যাক তার ৪২তম বিক্ষোভে অংশ নেন, ট্রাম্পের জানুয়ারিতে অভিষেকের পর থেকেই তিনি নিয়মিত প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন।
এবার তিনি স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্টস চরিত্রের পোশাক পরে এসেছিলেন, কারণ ব্যাঙের পোশাক পাওয়া যায়নি।
ট্রাম্প প্রশাসন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন শহরগুলোতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে—ফেডারেল বাহিনী পাঠানো, অভিবাসন কর্মকর্তার সংখ্যা বাড়ানো এবং ভিন্নমত দমন করার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বামপন্থী সংগঠনগুলোকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ ও ‘রাজনৈতিক সহিংসতা’র সঙ্গে জড়িত বলে অভিযুক্ত করছেন।
তবে এসবের বিরুদ্ধে শহরগুলো প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। অনেক নগর কর্তৃপক্ষ জাতীয় গার্ড পাঠানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সাধারণ মানুষও রাস্তায় নেমে তাদের সম্প্রদায়ের সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
এইভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে ‘নো কিংস’ আন্দোলন এক প্রতীকী বার্তা দিয়েছে—দেশটি গণতন্ত্রের জন্য গড়ে উঠেছে, কোনো রাজা বা একনায়কের জন্য নয়।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।