নওগাঁর আত্রাইয়ে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত

নওগাঁর আত্রাইয়ে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত

20 October, 2025 | সময়: 5:17 pm

নওগাঁর আত্রাইয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের যৌথ আয়োজনে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগ প্রতিরোধে এক জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আবু আনাছ এর সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নূরে আলম সিদ্দিক।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, অ্যানথ্রাক্স একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা গরু-ছাগলসহ অন্যান্য প্রাণীকে দ্রুত আক্রান্ত করে এবং এটি পশু থেকে মানুষেও ছড়াতে পারে। এ রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।

আক্রান্ত পশুর মাংস বা দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কোনোভাবেই আক্রান্ত পশু জবাই করা যাবে না। উপজেলা প্রশাসন সব সময় আপনার পাশে আছে। এই রোগ প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের নির্দেশনা মেনে চলুন এবং দ্রুত টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আবু আনাছ তার সমাপনী বক্তব্যে অ্যানথ্রাক্স রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় বলেন, অ্যানথ্রাক্স রোগটি সাধারণত তীব্র বা অতি তীব্র আকারে দেখা যায় তাই দ্রুত এর লক্ষণগুলো চিনে নেওয়া জরুরি।

আক্রান্ত পশু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং দ্রুত মারা যায়। অনেক সময় রোগের কোনো প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ হওয়ার আগেই পশু মারা যেতে পারে। পশুর শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ খুব বেড়ে যায়, শরীরে কাঁপুনি দেখা দিতে পারে।

স্বাভাবিক ছিদ্রপথ যেমন মুখ, নাক, কান, পায়ু এবং যোনিপথ দিয়ে আলকাতরার মতো কালচে রক্তক্ষরণ হতে পারে। পেট ফুলে যাওয়া এবং দুগ্ধদানকারী পশুর দুধ উৎপাদন হঠাৎ কমে যাওয়া অন্যতম লক্ষণ। যদি কোনো পশুর এমন লক্ষণ দেখা যায় তবে দ্রুত নিকটস্থ প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করা উচিত।

তিনি রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে আরও বলেন, এই রোগ প্রতিরোধের মূল উপায় হলো সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। অ্যানথ্রাক্স একটি টিকা-প্রতিরোধযোগ্য রোগ। ঝুঁকিপূর্ণ বা বন্যা-প্রবণ অঞ্চলে প্রতি বছর নিয়মিতভাবে গবাদি পশুকে অ্যানথ্রাক্স টিকা দিতে হবে।

রোগ দেখা দিলে দ্রুত আক্রান্ত এলাকায় টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে হবে। খামার ও পশুর শেড পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মৃত পশুকে কখনোই খোলা জায়গায় ফেলে দেওয়া যাবে না বা জবাই করা যাবে না।

এছাড়াও তিনি বলেন, যদি কোনো পশু অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তবে মৃতদেহটিকে গভীর গর্তে চুন দিয়ে পুঁতে ফেলতে হবে অথবা বিশেষজ্ঞের পরামর্শে আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর মাংস বা দুধ খাওয়া থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। চামড়া ছাড়ানো বা মৃতদেহ স্পর্শ করা যাবে না। যারা আক্রান্ত পশুর সংস্পর্শে আসবেন তাদের স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে এই সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। সময়মতো টিকাদানই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রধান পথ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ মাকসুদুর রহমান, আত্রাই উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. তসলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আত্রাই উপজেলা শাখার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান প্রাং, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জগলুল আরেফিন, সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন, উপজেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক পি.এম কামরুজ্জামান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাযহারুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান খবিরুল ইসলাম, সম্রাট হোসেন, নাজিমুদ্দীন, আফজাল হোসেন, মঞ্জরুল আলম, মামনুর রশিদ, আত্রাই থানা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদুল আলম পিন্টু, এমরান মাহমুদ প্রত্যয় প্রমুখ।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।