লালমনিরহাটে সবজির দাম কমলেও কমেনি মাছ-মাংসের
লালমনিরহাটে সবজির দাম কমলেও কমেনি মাছ-মাংসের
লালমনিরহাটে আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করায় সরবরাহ বেড়েছে। এতে সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি এলেও কমেনি মাছ, মাংস ও ডিমের দাম।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে জেলা শহরের গোশালা বাজার, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা, চাঁদনী বাজার, মহেন্দ্রনগর, বুড়ি বাজার, মস্তুবির বাজার ও বড়বাড়ী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা, সোনালি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫০০ টাকা দরে। গরুর মাংস ৬৬০ থেকে ৭০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আর দেশি মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়, ফার্মের ডিম ৪২ টাকায়, হাঁসের ডিম ৬৫ টাকায় এবং কোয়েলের ডিম ১২ টাকায়।
বড়বাড়ী বাজারের মুরগি বিক্রেতা মুন ইসলাম ও রশিদ আলী বলেন, কিছুদিন ধরে মুরগির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও শীতের মৌসুমে সরবরাহ বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের মতে, গরমের সময় অনেক খামারে মুরগি অসুস্থ হয়ে মারা যায়, এতে সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বাড়ে।
এ বিষয়ে মুরগি বিক্রেতা রবি মিয়া আরও বলেন, গত সপ্তাহে পাইকারিতে ব্রয়লারের দাম ছিল ১৫০ টাকার ওপরে, এখন নেমে এসেছে ১৩০ থেকে ১৩২ টাকায়। তাই খুচরায় ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে খাবার ও পরিবহন ব্যয় না কমলে দাম আর কমবে না।
বাজারে গরু কম দামে পাওয়া গেলেও মাংসের দাম এত বেশি কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে গরুর মাংসের মহাজন আসিমুদ্দি কসাই বলেন, আমরা সব সময় দেখতে সুন্দর ও বড় গরু জবাই করে থাকি। এছাড়া একটি দোকান পরিচালনা করতে ৫ থেকে ৬ জন লোক লাগে। সেই সঙ্গে বর্তমানে গবাদিপশুর খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। সবকিছু মিলে মাংসের দাম ঠিকঠাকই আছে বলে মনে করি।
বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা মমিনুল ইসলাম ও রিয়াজুল আলী বলেন, ব্রয়লার ছাড়া অন্য কোনো মুরগি এখন হাতের নাগালে নেই। ছোট একটি সোনালি মুরগিও কিনতে ২৯০ টাকা লাগে। উপার্জন কম অথচ সব কিছুর দাম বেড়ে চলেছে।
এদিকে মহেন্দ্রনগর বাজারে মাছ কিনতে আসা ক্রেতা আফজাল হোসেন বলেন, রুই বা কাতল মাছের দাম এখন অনেকটাই বেশি মনে হচ্ছে। আগের মতো প্রতি সপ্তাহে মাছ কিনতে পারি না। আগে যে মাছ ২০০ টাকায় মিলতো, এখন সেটাই ৩০০ টাকার উপর।
গোশালা বাজার এলাকায় আরেক ক্রেতা পারভিন আক্তার বলেন, আমাদের আয় রোজগার তেমন বেশি না। ডিম এখন গরিব মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে। আগে সকালের নাশতায় ডিম রান্না করতাম, এখন সপ্তাহে এক-দুদিনই কিনতে পারি। মাছ-মাংস তো আরও দূরের কথা।
জেলা সদরের বিভিন্ন মাছের বাজারে রুই মাছ আকারভেদে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, কাতল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, শিং (হাইব্রিড) ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙাশ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
বিক্রেতারা জানান, মাছের খাবার ও পরিবহন ব্যয় না কমা পর্যন্ত এসব মাছের খুচরা দামে পরিবর্তন আনা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে খুচরা সবজি দোকানগুলোতে মূলা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়, বেগুন ২০ থেকে ২৫ টাকা, পটল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মাটিয়া লাউ ২০ থেকে ২৫ টাকা, নবী শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ছোট শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বড় করলা ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ১৫ টাকা।
এছাড়া কচুর বই ২৫ টাকা, কাঁচা কলা ও লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা, কুমড়া ৪০ টাকা, শসা ২০ টাকা, আলু মানভেদে ১২ থেকে ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, রসুন ৭০ টাকা, লাল মরিচ (১০০ গ্রাম) ৪০ টাকা, আদা ১১০ থেকে ১২০ টাকা এবং টমেটো ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে, শহর ও গ্রামের পর্যায়ে বাজারগুলোতে এসব মাছ, মাংস ও সবজির দামের সামান্য ব্যবধান হতে পারে।
বড়বাড়ী বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. রায়হান সোহেল বলেন, শীতের মৌসুম শুরু হওয়ায় কৃষকরা আগাম সবজি তুলছেন। সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। শীত আরও পড়লে দাম আরও কমবে। ক্রেতা আজিজ রহমান বলেন, শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমায় স্বস্তি পাচ্ছি।
সবজি আড়তের ইজারাদার মোশারফ আলী জানান, অল্প পরিমাণে শীতকালীন সবজি বাজারে উঠছে। এতে দাম কিছুটা কমেছে। সরবরাহ বাড়লে বাজার আরও স্থিতিশীল হবে।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।