ইমরান খানের শারীরিক রিমান্ডের আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বুধবার পাঞ্জাব সরকারের করা ইমরান খানের শারীরিক রিমান্ডের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, গ্রেফতারের এক বছরেরও বেশি সময় পর এ ধরনের আবেদন করার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।


এই মামলাটি শুনানির জন্য গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি হাশিম কাকার ও বিচারপতি সালাহউদ্দিন পানহোয়ার। রায়ে বলা হয়, পাঞ্জাব সরকার চাইলে ট্রায়াল কোর্টে নতুন করে আবেদন করতে পারে। তবে আদালত স্পষ্ট করে দেয়, ইমরান খানের আইনজীবীরা চাইলে এই ধরনের যেকোনো আবেদন চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।


রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি হাশিম কাকার বলেন, আসামিকে গ্রেফতারের দেড় বছর হয়ে গেছে — এই পর্যায়ে শারীরিক রিমান্ডের প্রশ্নই উঠে না।

মামলাটি মূলত পাঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকে ইমরান খানের শারীরিক হেফাজত চাওয়ার প্রসঙ্গে, যাতে তার ফটো, পলিগ্রাফ (মিথ্যা ধরার যন্ত্র), ও ভয়েস-ম্যাচিংসহ বিভিন্ন ফরেনসিক টেস্ট করা যায়।

Join our Facebook Group

শুনানির সময় পাঞ্জাবের প্রসিকিউটর জেনারেল যুক্তি দেন, এসব পরীক্ষা তদন্তের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে বিচারপতি কাকার বলেন, আলোচ্য আবেদন শুধুমাত্র শারীরিক রিমান্ড সম্পর্কিত — ফরেনসিক পরীক্ষার নয়।


বিচারপতি সালাহউদ্দিন পানহোয়ার প্রশ্ন তোলেন, এমন পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা কোথায়? তিনি মন্তব্য করেন, খুন বা জিনার মতো গুরুতর মামলাতেও কখনো এ ধরনের পরীক্ষা করা হয়নি। আশাবাদী, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও রাষ্ট্র একই রকম আগ্রহ দেখাবে।

সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যকে সরকারের উচ্চ প্রোফাইল রাজনৈতিক মামলাগুলোর প্রতি অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়ার এক প্রকার পরোক্ষ ভর্ৎসনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে সাধারণ নাগরিকেরা বিচারপ্রাপ্তিতে নানা রকম দেরি ও অনিয়মের মুখোমুখি হন।

এই রায় এমন এক সময় এলো যখন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান একাধিক মামলায় জর্জরিত অবস্থায় ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে কারাবন্দি রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে সহিংসতায় উসকানি পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে এমন খবর ছড়ায় যে সরকার ইমরান খানকে আরও কিছু ফরেনসিক পরীক্ষার আওতায় আনতে চায়। বিষয়টি তার আইনজীবীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে, যারা একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তদন্তের এই পর্যায়ে অপ্রয়োজনীয় বলে দাবি করেন।


সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তাৎক্ষণিকভাবে ইমরান খানকে শারীরিক হেফাজতে নেওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে, যতক্ষণ না নতুন কোনো ভিত্তিতে ট্রায়াল কোর্টে আবেদন করা হয়।


আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আদালতের বাড়তে থাকা নজরদারি এবং কার্যপ্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে।

Instagram Notice

সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম পেজটি ভিজিট করুন।

Post Comment