আরও ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে ভারত, সামরিক পরিকল্পনায় নতুন চাপ পাকিস্তানের

আরও ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে ভারত, সামরিক পরিকল্পনায় নতুন চাপ পাকিস্তানের
শত্রুপক্ষকে যুদ্ধক্ষেত্রে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ ভারত। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিকে আরও উন্নত করতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের জন্য প্রায় ১০০০০ কোটি টাকার বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
এই অত্যাধুনিক সিস্টেম শত্রুপক্ষের ছোড়া মিসাইল, ড্রোন, যুদ্ধবিমানসহ বিভিন্ন হুমকি মোকাবিলায় সক্ষম।
সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় বিমানবাহিনী ইতোমধ্যেই এই সিস্টেমের মাধ্যমে পাকিস্তানের আকাশে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ৫ থেকে ৬টি যুদ্ধবিমান এবং একটি গুপ্তচর বিমানকে হুঁশিয়ার করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই খরচ এবং ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে পাকিস্তানের সামরিক পরিকল্পনায় নতুন চাপে পড়বে এবং আকাশে আগ্রাসন কার্যত কঠিন হয়ে উঠবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ভারতের জন্য মোট পাঁচটি স্কোয়াড্রন এস-৪০০ আসার কথা ছিল। এর মধ্যে তিনটি স্কোয়াড্রন ইতিমধ্যেই বিতরণ হয়েছে এবং ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চতুর্থ স্কোয়াড্রনের ডেলিভারি বিলম্বিত হয়েছে।
ভারত নতুন এস-৪০০ এবং এস-৫০০ সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনাও করছে এবং দুই দেশের মধ্যে চুক্তির আলোচনাও চলছে। পাশাপাশি ভারত এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল এবং ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইলের আধুনিকায়ন প্রকল্পেও এগোচ্ছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২৩ অক্টোবর প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিলের সভায় এই মিসাইল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অনুমোদনের পর ভারতীয় বিমানবাহিনীর ইন্টারভেন্টরি আরও বাড়বে, স্কোয়াড্রন সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষমতা আরও শক্তিশালী হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামনাসামনি যুদ্ধে পাকিস্তানের জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। ভারতের লক্ষ্য শুধুই আকাশে শত্রু প্রতিরোধ নয়, বরং যেকোনো আক্রমণের সময় পূর্ণ প্রস্তুত থাকতে হবে এবং দেশের সীমারক্ষা আরও শক্ত করা।
এস-৪০০ সিস্টেমের বিশেষত্ব হলো এটি একাধিক ধরনের হুমকি একসঙ্গে মোকাবিলা করতে সক্ষম। একাধিক লক্ষ্য চিহ্নিত করতে পারে, ক্ষেপণাস্ত্রকে ট্র্যাক করে ধ্বংস করতে পারে এবং শত্রুপক্ষের আক্রমণ পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
ভারতীয় এয়ারফোর্সের কর্মকর্তারা এটিকে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে বর্ণনা করছেন। এয়ার ডিফেন্স ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভারত নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের দক্ষতা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও বাড়াতে চাইছে। এই পরিকল্পনার ফলে শত্রুপক্ষকে আকাশে নেমে আসা বা আক্রমণ চালানো কঠিন হয়ে যাবে।
ভারতীয় নীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের আকাশে এই ধরনের আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন শুধুমাত্র সুরক্ষা নয়, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এস-৪০০ এবং এস-৫০০ ব্যবস্থার মাধ্যমে দীর্ঘ দূরত্বের নজরদারি এবং হুমকি নিরসন করা সম্ভব হবে।
সাম্প্রতিক সংঘর্ষে দেখা গেছে, ভারতীয় সিস্টেম পাকিস্তানের বিমান ও গুপ্তচর কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এই ধরনের প্রস্তুতি ভবিষ্যতে যেকোনো সীমান্ত উত্তেজনা বা সংঘর্ষে ভারতের অবস্থান আরও শক্ত করবে।
আকাশ প্রতিরক্ষা বাড়ানোর পাশাপাশি, ভারত আরও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা স্থাপন করছে। বিভিন্ন ধরনের ড্রোন, রাডার এবং আকাশে সনাক্তকরণ প্রযুক্তি একত্রিত করা হচ্ছে। ভারতীয় এয়ারফোর্সের কর্মকর্তারা জানান, নতুন ক্ষেপণাস্ত্র কেনার মাধ্যমে আকাশে সেনা ও সামরিক ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে এবং যেকোনো শত্রুপক্ষের হুমকি মোকাবিলা করা সহজ হবে।
এই প্রকল্প শুধু প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ানোর নয়, দেশের সামরিক কৌশল এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেও করা হচ্ছে। এস-৪০০ ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারতের আকাশে আধুনিক ও শক্তিশালী নজরদারি, প্রতিরক্ষা এবং শত্রুপক্ষের আক্রমণ মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতের যেকোনো সংঘর্ষে ভারতের অবস্থান এবং প্রতিরক্ষা কৌশল আরও শক্তিশালী হবে, এবং শত্রুপক্ষের জন্য আকাশে আগ্রাসন কার্যত কঠিন হয়ে উঠবে।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।