মঙ্গলবার

২২ জুলাই, ২০২৫

৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২৬ মুহররম, ১৪৪৭

ভয়াবহ গরম ও তীব্র পানি সংকটে ইরান, তেহরানে ছুটি ঘোষণা

ভয়াবহ গরম ও তীব্র পানি সংকটে ইরান, তেহরানে ছুটি ঘোষণা

পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানে ভয়াবহ তাপপ্রবাহের মধ্যে চরম পানিসংকটে পড়েছে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল। কোনো কোনো জায়গায় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে, যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানী তেহরানে বুধবার (২৩ জুলাই) সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২০ জুলাই) রাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। দেশটির সরকার মানুষকে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের অনুরোধও জানিয়েছে।

ইরানের জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মরুপ্রধান এলাকাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। অতিরিক্ত গরমে এসব অঞ্চলে পানির ঘাটতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানান, তীব্র গরম ও পানি-বিদ্যুৎ সংকটের প্রেক্ষিতে আগামী বুধবার তেহরান প্রদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তার ভাষায়, ‘চলমান গরম ও সাশ্রয়ের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রোববার তেহরানের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সোমবার ৪১ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


ইরানে পানিসংকট নতুন নয়। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই প্রকট। ভূগর্ভস্থ পানি অতিমাত্রায় উত্তোলন, খরা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবকে এই সংকটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব।


তেহরান সিটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেহদি চামরান জনগণকে পানি সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, না হলে সামগ্রিক সরবরাহব্যবস্থায় ধস নামতে পারে।’

পানি ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে। তেহরান প্রাদেশিক পানি ব্যবস্থাপনা কোম্পানির মতে, রাজধানীতে পানির ব্যবহার অন্তত ২০ শতাংশ কমানো দরকার। তাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘তেহরানের পানি সরবরাহকারী বাঁধগুলোর জলাধার বর্তমানে গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে নিচু স্তরে রয়েছে।’

এর আগে শনিবার দেশটির রক্ষণশীল সংবাদপত্র ‘জাভান’ জানিয়েছিল, রাজধানীর কিছু এলাকায় চাহিদা সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে পানির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এতে করে ওইসব এলাকায় বাসিন্দাদের প্রতিদিন ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পানিবিহীন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে।

এ নিয়ে রোববার দুঃখ প্রকাশ করেন ইরানের জ্বালানিমন্ত্রী আব্বাস আলিয়াবাদি। তিনি বলেন, ‘সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য বজায় রাখতেই কিছু এলাকায় সরবরাহ কমানো হয়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তীব্র গরম শুধু মানুষের জীবনযাত্রাকেই বিপর্যস্ত করছে না, বরং পুরো দেশের বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহব্যবস্থাকেই ভয়াবহ সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে। সংকট মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।