আন্তর্জাতিক হুমকি উপেক্ষা করেই গাজা দখলে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল

আন্তর্জাতিক হুমকি উপেক্ষা করেই গাজা দখলে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা থামছে না। আন্তর্জাতিক হুমকি উপেক্ষা করেই ইসরাইল গাজা দখল করতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। উপত্যকার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। তারা বাসিন্দাদের সমুদ্র উপকূলের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও জাতিসংঘে গাজার যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটি।
সবচেয়ে বড় নগরকেন্দ্র গাজা সিটিতে উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী ও তাদের ট্যাংক বহর। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বলপ্রয়োগ করে (‘স্যান্ডউইচ’ বানিয়ে) উপকূলের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সেনাদের এই কৌশল শহর থেকে জনগণকে উচ্ছেদ করে দক্ষিণ দিকে পাঠানোর চক্রান্তের অংশ।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নাদাভ শোশানি জানিয়েছেন, পদাতিক, ট্যাংক ও আর্টিলারির সহায়তায় বিমানবাহিনীও অভিযানে যোগ দিয়েছে। তাদের লক্ষ্য হলো গাজার শাসকগোষ্ঠী সশস্ত্র হামাসের ওপর চাপ বাড়ানো।
সেনারা দুই দিক থেকে চাপ সৃষ্টি করছে, এতে মানুষ উপকূলীয় রাস্তা ধরে দক্ষিণে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে ধারাবাহিক হামলায় মানুষ আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে ছুটছে। এর ফলে মহাসড়কেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টানা ড্রোন ও যুদ্ধবিমানের বোমা হামলার পাশাপাশি ইসরাইলি সেনারা রিমোট নিয়ন্ত্রিত ‘রোবট’ ব্যবহার করছে—যা বিস্ফোরক বোঝাই করে পুরো এলাকা ধ্বংস করছে।
গাজায় অন্তত ২৯ জনকে হত্যা করেছে ইসরাইল। জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজা শহরের শেষ জীবনীশক্তি ভেঙে পড়ছে। তারা অভিযোগ করেছেন, ইসরাইল পদ্ধতিগতভাবে ত্রাণ পৌঁছানো বন্ধ করছে, উত্তরে জিকিম ক্রসিং বন্ধ রাখা হয়েছে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় তাত্ক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ষষ্ঠ বারের মতো ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে প্রস্তাবটি পাশ হয়নি।
ডেনমার্কের জাতিসংঘ প্রতিনিধি ক্রিস্টিনা মার্কাস লাসেন বলেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে, এটি আর অনুমান বা ঘোষণা নয়, বরং বাস্তবতা। ইসরাইলের সামরিক অভিযানে বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই মানবিক বিপর্যয় ও নৈতিক ব্যর্থতাই আমাদের আজ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।
প্রস্তাবে গাজায় সব ধরনের অবরোধ তুলে নেওয়ার পাশাপাশি হামাসসহ সব সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে থাকা জিম্মিদের মর্যাদাপূর্ণ ও নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছিল। ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপবিশেষ দূত মরগান অর্টাগাস বলেন, এই যুদ্ধ শুরু ও অব্যাহত রাখার জন্য দায়ী হামাস।
ইসরাইল যুদ্ধ শেষ করার শর্ত মেনে নিয়েছে, কিন্তু হামাস তা নাকচ করছে। জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে অস্ত্র নামিয়ে রাখলেই যুদ্ধ আজই শেষ হতে পারে।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।