সিরাজগঞ্জে মেয়ের লাশের ছবি হাতে নিয়ে বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা-মা

সিরাজগঞ্জে মেয়ের লাশের ছবি হাতে নিয়ে বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা-মা

20 September, 2025 | সময়: 5:42 pm

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একমাত্র মেয়ে মরিয়মের লাশের ছবি হাতে নিয়ে বিচার চেয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা নজরুল ইসলাম ও মা শাহীনুর খাতুন। তাদের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে, অথচ দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও তারা ন্যায়বিচার পাননি।

২০২৪ সালের ২১ জুন রাতে মরিয়মকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। পরদিন ২২ জুন সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে মরিয়মের মৃত্যুর খবর আসে। সেখানে গিয়ে তার বাবা-মা দেখেন, ঘরের মেঝেতে নিথর দেহ পড়ে আছে এবং শ্বশুরবাড়ির সবাই পালিয়ে গেছেন। মরিয়মের শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন ছিল।

ওই দিন উল্লাপাড়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং অসহায় বাবা নজরুল ইসলামের টিপসই নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করে। পুলিশের গড়িমসির কারণে পরে ২৬ জুন পরিবারটি নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালে পিটিশন মামলা দায়ের করে।

প্রথমে উল্লাপাড়া থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) রবিউল তদন্ত করে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রতিবেদন দেন। পরিবারের আপত্তির পর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইয়ের এসআই মোজাম্মেল হককে, যিনিও একই ধরনের প্রতিবেদন দেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, মরিয়মকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

আদালত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের সঙ্গে পূর্ববর্তী দুই তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনের অমিল পাওয়ায় আপত্তি জানান। কোনো যৌক্তিক প্রমাণ দিতে না পারায় আদালত তৃতীয়বারের মতো তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের হাতে। এই বছরের ১৬ জুলাই থেকে তদন্তভার পেলেও এসআই মো. রায়হান আলী বাদীপক্ষ ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে কথা বলেননি। ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও তিনি সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে এসআই রায়হান আলী বলেন, আমরা তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি বলা হয়নি। তবে কোর্টের জজ লিখেছেন ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এটি অর্ডার শিটে লেখা রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনের সাথে কথা বলতে গেলেও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

মরিয়মের বাবা নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, পুলিশ আমার মেয়ের হত্যার ন্যায়বিচার দিচ্ছে না। আসামিপক্ষ থেকে টাকা খেয়ে তাদের হয়ে কাজ করছে। তিনি আদালতে ন্যায়বিচার চান।

মরিয়মের মা শাহীনুর খাতুন বলেন, বিয়ের সময় ৪ লাখ টাকা আর ১ ভরি সোনা দিয়েছি। তারপরও জামাই যৌতুকের জন্য মেয়েকে মারধর করতো। অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। টাকার দাবি পূরণ করতে না পারায় আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।

সেনাবাহিনীর সদস্য রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে মরিয়মের বিয়ে হয় ২০২০ সালের জুলাই মাসে। তবে নিয়ম ভেঙে অনুমতি ছাড়া বিয়ে করার পর কাবিননামায় বিয়ের তারিখ ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট দেখানো হয়। এর মধ্যেই ২০২১ সালের ৩১ মে তাদের কন্যাসন্তান রুবাইয়া জন্ম নেয়। বিয়ের তারিখ গোপন করার এই বিষয়টি সেনা সদস্য রিয়াজুলের বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।