বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে বাড়ছে রাজস্ব আয়

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে বাড়ছে রাজস্ব আয়
বাংলাদেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় (বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত ও ভূটান) স্থলবন্দর বাংলাবান্ধায় আবারও বাণিজ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে পাথর আমদানি। একইসঙ্গে নেপালে নিয়মিতভাবে রপ্তানি হচ্ছে পাট, আলু ও প্লাস্টিক সামগ্রী। ফলে বন্দরে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে, বাড়ছে সরকারের রাজস্ব আয়।
এ স্থলবন্দরটির আমদানি বাণিজ্যের প্রায় ৯৫ শতাংশই পাথরনির্ভর। গত জুলাইয়ে ভারতের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পরিবর্তনের জেরে প্রায় চার মাস আমদানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। আগের বছরের তুলনায় পণ্য কম আমদানি হয়, যা স্থানীয় শ্রমজীবী মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছিল। এছাড়াও আন্দোলনে নেপাল সরকারের পতনের একসপ্তাহ বন্ধের পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পরিবর্তন হলে নতুন করে রপ্তানি করছে ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে ভারত ও ভুটান থেকে আবারও পাথর আসছে নিয়মিত। এর পাশাপাশি নেপালে প্রতিদিন রপ্তানি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টন কৃষিপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী ও গার্মেন্টস পণ্য।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাট ২৫ হাজার ২৪৬.৭৪ মে.টন ও সুতলি ৭৮০ মে.টন রপ্তানি করছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে পাট ৮ হাজার ৩০৯.৬০ মে.টন ও সুতলি ১০৫ মে.টন রপ্তানি করছে। অপরদিকে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৯ হাজার ৭৪০ মে.টন এবং চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে ৭ হাজার ৩৫ মে.টন রপ্তানি করছে। নেপালের বাজারে বাংলাদেশের লাল আলুর বিশেষ চাহিদা রয়েছে। একইভাবে বাংলাদেশি পাটও নেপালে জনপ্রিয়। ফলে এই দুটি কৃষিপণ্যের রপ্তানি ব্যাপক হারে বেড়েছে। তবে চলতি মাসের ৮ তারিখ থেকে পাট রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাবান্ধা শুল্ক স্টেশনে ৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ পর্যন্ত আদায় হয়েছে ১৬৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। যা একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের মতে, রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হলেও অবকাঠামো দুর্বলতা, শুল্ক জটিলতা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সমন্বয়ের অভাবে এখনো কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটেনি। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা বৃদ্ধিসহ চার দেশীয় বাণিজ্যিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করা গেলে বাংলাবান্ধা দেশের প্রধান স্থলবন্দরে পরিণত হবে বলে আশা বন্দর সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী রাশেদ আলী সরকার বলেন,বাংলাবান্ধা অপার সম্ভাবনাময় একটি স্থলবন্দর। এখানে ভারত, ভুটান ও নেপাল থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ বন্দরটি দেশের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হতে পারে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি একসময় কেবল পাথর আমদানির জন্য পরিচিত ছিল। এখন নেপালে আলু, পাট, কটন র্যাগস, ইলেকট্রনিক পণ্যসহ বহুবিধ পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। গত অর্থবছরের তুলনায় আমদানি কমলেও রপ্তানি বেড়েছে। এতে করে রাজস্ব বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান-দুই-ই বেড়েছে।
📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের
ইনস্টাগ্রাম
ভিজিট করুন।