পশ্চিম তীরের ব্যবসায়ীকে গাজার গভর্নর করতে চায় ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র

পশ্চিম তীরের ব্যবসায়ীকে গাজার গভর্নর করতে চায় ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র

30 August, 2025 | সময়: 10:25 am

পশ্চিম তীরের ধর্নাঢ্য ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ী স্যামির হুলিলেহ। তিনি দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাকে গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী গভর্নর হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বাইডেন প্রশাসন প্রথমবার এ প্রস্তাব তোলেন। প্রস্তাবটি দেন ইরান-জন্ম ইসরাইলি-কানাডীয় লবিস্ট অ্যারি বেন-ম্যানাশে। তিনিই বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ কাজ করছিলেন। তবে বাইডেন বা ট্রাম্প প্রশাসন কেউই হুলিলেহের নাম প্রকাশ্যে বলেনি। হামাসও জানিয়েছে, কোনো বৈঠকে তার নাম ওঠেনি। আলজাজিরা।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেন-ম্যানাশে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি এজেন্ট হিসাবে নিবন্ধিত হন। নথিতে উল্লেখ ছিল, হুলিলেহ তাকে ৩ লাখ ডলার দিয়েছেন মার্কিন সরকারকে লবিং করার জন্য। এছাড়াও চুক্তিতে আরও কিছু শর্ত উল্লেখ থাকে। সেখানে বলা হয়েছিল- গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও আরব সেনা থাকবে। নতুন রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি হবে এবং হামাসের সামরিক উপস্থিতি থাকবে না। বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুলজাওয়াদ ওমর বলেছেন, হুলিলেহ আগে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। কিন্তু এখন তিনি সুযোগ খুঁজছেন। এছাড়াও নেতানিয়াহু চান না গাজা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা হামাসের হাতে থাকুক।

এই পরিস্থিতিতে হুলিলেহকে তারা বিকল্প হিসাবে আনতে চাইছেন। হুলিলেহ একজন রামাল্লাভিত্তিক ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদ। তিনি ১৯৯০-এর দশকে ফিলিস্তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন। ২০০৫-০৬ সালে কয়েক মাস মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন। এছাড়াও হুলিলেহ ফিলিস্তিনি অর্থনৈতিক নীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান ছিলেন। এরপর তিনি ফিলিস্তিন স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান হন।

গত সপ্তাহে হুলিলেহ আরব মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দেন। এরপর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) তাকে তীব্র সমালোচনা করে বিবৃতি দেয়। তারা তাদের বিবৃতিতে জানান, হুলিলেহের গর্ভনর হওয়া ইসরাইলের পরিকল্পনার সঙ্গে যায়। এমনটা বাস্তবায়িত হলে গাজা পশ্চিম তীর থেকে আলাদা হয়ে পড়বে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর প্রশাসন শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধিকার।

তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের এমন বিবৃতির পালটা জবাব দিয়েছেন হুলিলেহ। তিনি জানিয়েছেন, গভর্নর হওয়ার লোভ তার নেই। তিনি চান, যেই আসুক, সঠিকভাবে গাজা পরিচালনা করতে পারে। এছাড়াও হুলিলেহ বলেন, তার গর্ভনর হওয়ার অনুমোদন অবশ্যই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ থেকে আসতে হবে। হুলিলেহ বলেন, তিনি গাজার নিরাপত্তাব্যবস্থার নিশ্চয়তার পাশপাশি মানুষের জন্য সীমান্ত খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে চান। তবে গাজায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি। পিএ প্রকাশ্যে তাকে নিন্দা করলেও, হুলিলেহ দাবি করেন তিনি এক বছর ধরে তাদের সঙ্গে আলোচনায় আছেন।

তিনি মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও কয়েকবার সাক্ষাৎ করেছেন। তার মতে, তিনি আসল আলোচনার পক্ষ নন, শুধু চুক্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে পারেন। হুলিলেহ আরও বলেন, শেষ পর্যন্ত আমেরিকাই এ যুদ্ধের সমাধান দিতে পারবে। তার মতে, যুদ্ধ থামাতে পারলে সেটা ট্রাম্প-ই পারবেন। তবে ট্রাম্প অনিশ্চিত ও পরিবর্তনশীল একজন নেতা।

উল্লেখ্য, হুলিলেহের নাম সামনে আনা অ্যারি বেন-ম্যানাশে একজন ইরান-জন্ম ইসরাইলি-কানাডীয় সাবেক অস্ত্র ব্যবসায়ী। তিনি এক দশক ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার ভেতরে কাজ করেছেন। তিনি বিভিন্ন দেশে গোপন অস্ত্র বিক্রির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। পরে তার লবিং প্রতিষ্ঠান জিম্বাবুয়ে, সুদান ও মিয়ানমারের সরকারে কাজ করেছে।

📷 ইনস্টাগ্রাম নোটিশ:
সার্ভারে জায়গা স্বল্পতার কারণে ছবি সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ছবি পেতে আমাদের ইনস্টাগ্রাম ভিজিট করুন।