তেলআবিবের বেপরোয়া অভিযানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমালোচনা

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন ২২টি ইহুদি বসতির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের সরকার। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেন। এদিকে গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার সমালোচনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অন্যদিকে গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ২২১ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দখলকৃত পশ্চিম তীরে বড় পরিসরে বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। গত তিন দশকের মধ্যে এটিই বসতি সম্প্রসারণের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে সেটেলমেন্ট বিরোধী সংগঠন পিস নাউ।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাজ বলেন, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে রুখে দেবে। সম্ভাব্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্য হুমকি। অর্থমন্ত্রী স্মোত্রিচ এটিকে এক প্রজন্মের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করে বলেন, পরবর্তী ধাপ সম্পূর্ণ সার্বভৌমত্ব। এগুলো বেশকিছু আগে থেকেই ‘আউটপোস্ট’ হিসেবে বিদ্যমান ছিল, তবে এবার সেগুলোকে বৈধতা দেওয়া হলো ইসরায়েলি আইনের আওতায়।

আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ বিবেচিত হলেও ইসরায়েল তা মানে না। ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা’ বলে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনা বলেন, এই উগ্র ডানপন্থি সরকার যে কোনো মূল্যে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে।

সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, অনুমোদিত নতুন বসতিগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তর সামারিয়ার হোমেশ ও সা-নুর। ২০০৫ সালে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় এই দুটি বসতি ছেয়ে দিয়েছিল ইসরায়েল। এরপর ২০২২ সালে হোমেশে একটি ইহুদি ধর্মীয় স্কুল ও অননুমোদিত আউটপোস্ট গয়ে তোলে বসতির পক্ষে কাজ করা একটি গোষ্ঠী, যেটি এখন বৈধতা পাচ্ছে।

আরেকটি বসতি গড়ে তোলা হবে নাবলুসের কাছে এবল পাহাড়ে। পিস নাউ-এর পরিচালক লিওর আমিহাই বলেন, ইসরায়েলি সরকার এখন আর ছলচাতুরি করছে না বরং বসতি সম্প্রসারণ ও দখলদারিত্বই তাদের মূল লক্ষ্য। এই ঘোষণাকে দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক শান্তি সমাধানের প্রচেষ্টার ওপর বড় আঘাত বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। আগামী মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে নির্ধারিত ফরাসি-সৌদি শান্তি সম্মেলনের আগেই ইসরায়েলের এমন ঘোষণা আশঙ্কা জাগাচ্ছে।

জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আইসিজে গত বছর মতামত দিয়ে বলেছিল, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের উপস্থিতি অবৈধ। তারা জানায়, ইসরায়েলের সব বসতি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গড়ে তোলা হয়েছে এবং এসব সরিয়ে নিতে হবে।

এদিকে গাজায় ইসরায়েলের বেপরোয়া অভিযানে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এর সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ কূটনীতিক কায়া কাল্লাস। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে লড়তে যা প্রয়োজন, তার চেয়েও বেশি মাত্রায় গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা

Post Comment