হার্ভার্ডের সঙ্গে সব ফেডারেল চুক্তি বাতিলের ঘোষণা ট্রাম্প প্রশাসনের

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউসের নির্দেশে, এবার বিভিন্ন ফেডারেল সংস্থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে থাকা প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সিএনএনকে জানিয়েছেন, এটি মার্কিন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর চলমান রাজনৈতিক চাপের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ফেডারেল জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এক কর্মকর্তার লেখা চিঠিতে হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় বর্ণ বৈষম্য, ইহুদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার অভাব এবং শিক্ষা কার্যক্রমে প্রশাসনিক দাবিকে উপেক্ষা করা।

এর আগে, নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায় যে, হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ের মোট ফেডারেল অর্থায়নের কাটছাঁট ২.৬৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। হোয়াইট হাউস ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, হার্ভার্ডকে দেওয়া প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি ও অনুদান পর্যালোচনার আওতায় আনা হয়েছে।

তবে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী ক্যাম্পাসে ইহুদি বিরোধী কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একের পর এক বরাদ্দ বাতিল করছেন। ছবি: সংগৃহীতট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একের পর এক বরাদ্দ বাতিল করছেন। ছবি: সংগৃহীত

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার এনপিআরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি জানি না এ সিদ্ধান্তের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, তবে এটুকু নিশ্চিত যে এখানে কেউ কেউ একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধে লিপ্ত।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, এটি গবেষণার কেন্দ্র। হার্ভার্ডের গবেষণাই বহু গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ভিত্তি তৈরি করেছে।’ এভাবে বরাদ্দ বন্ধ করে দিলে গবেষণা থেমে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন যে, হার্ভার্ডের ফেডারেল অনুদান থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলার কেটে নেওয়া হতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানটির কর-মুক্ত মর্যাদাও বাতিল করা হতে পারে। এই পদক্ষেপকে অনেকেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং শিক্ষার স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছেন।

নিউ ইয়র্কের লেফটেন্যান্ট গভর্নর আন্তোনিও ডেলগাডো বলেন, ‘এটা শুধু হার্ভার্ড নয়, এটা তথ্য নিয়ন্ত্রণ ও ভিন্নমত দমনের একটি পরীক্ষা। রাষ্ট্রীয় শক্তির মাধ্যমে কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটাই এখানকার মূল প্রশ্ন।’

ম্যাসাচুসেটসের গভর্নর মাউরা হিলি বলেন, ‘হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর আমাদের স্থানীয় অর্থনীতিতে ৪০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অবদান রাখে এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ট্রাম্প একে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।’ এটি ভবিষ্যতে দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় আরও বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা

তথ্যসূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস,সিএনএন

Post Comment

বিশ্ব